Entertainment

5 hours ago

Panchayat Season 4: ফুলেরায় মহিলা প্রধানের চমক, রিঙ্কি-সচিবের প্রেমে নতুন মোড়, কেমন হল নতুন মরশুম?

Panchayat Season 4
Panchayat Season 4

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক:  জিতেন্দ্র কুমার অভিনীত জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ‘পঞ্চায়েত’-এর তৃতীয় মরশুম অবশেষে মুক্তি পেয়েছে, তবে এই মরশুমে ভক্তদের প্রত্যাশা অনুযায়ী মেলে না মনোরঞ্জনের সেই চিরপরিচিত স্বাদ। ফুলেরা গ্রামের সহজ-সরল জীবনের ছবি, হাস্যরস আর মানবিক টানাপোড়েন নিয়ে গড়ে ওঠা এই সিরিজ প্রথম দু'টি মরশুমে দর্শকের হৃদয়ে স্থায়ী ছাপ ফেললেও, এবার রাজনীতির মোড়কে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই সাবলীলতা ও আবেগ।

প্রথম দুটি মরশুমে ফুলেরা যেন ছিল এক নিঃশব্দ সুন্দর গ্রাম যেখানে জীবনের নানা জটিলতা এসে ধরা দিত হাস্যরসের মোড়কে। একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, যিনি সরকারি চাকরির খোঁজে এসে অগত্যা গ্রামের পঞ্চায়েত সচিবের পদে যোগ দেন, সেই অভিনব গল্প নিয়ে দর্শকের মন জয় করেছিল ‘পঞ্চায়েত’। শহুরে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে গ্রামীণ জীবনের নানা অসংগতিকে দেখা, তার সঙ্গে সাদামাটা মানুষের সম্পর্ক, ছোট ছোট ঘটনার আবেগ – সব মিলিয়ে দর্শক পেয়েছিল এক অভিনব স্বাদ।

তবে তৃতীয় মরশুমে গল্পের চালচিত্র একেবারে পাল্টে যায়। এবার গল্পের কেন্দ্রে রাজনীতি। স্থানীয় নির্বাচন, ক্ষমতার লড়াই, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও ষড়যন্ত্রে ভরে উঠেছে কাহিনি। পঞ্চায়েত সচিব অভিষেক ত্রিপাঠী (জিতেন্দ্র কুমার) নিজেও এই ক্ষমতার টানাপোড়েনে জড়িয়ে পড়েছেন। প্রথম যেখানে তাঁকে দেখা গিয়েছিল এক অনিচ্ছুক সরকারি কর্মী হিসেবে, এখন তিনি ফুলেরার রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছেন। এমনকি রাজ্যের উচ্চপদস্থ রাজনৈতিক চরিত্রদের আগমন ঘটেছে গ্রামে, যা আগে ছিল ভাবনার বাইরে।

রাজনীতির প্রবল রঙে ঢেকে গিয়েছে সেই সরলতা, যেটা ছিল ‘পঞ্চায়েত’-এর প্রাণ। ফুলেরা আর আগের মতো প্রাণবন্ত বা অনাড়ম্বর মনে হয় না। সিরিজে রাজনীতির গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ঠিকই, তবে তাতে হাস্যরস ও আবেগের ভারসাম্য অনেকটা নষ্ট হয়েছে। কিছু চরিত্র যেমন বিনোদ সিং, প্রদ্যুম্ন, বিকাশ – যারা প্রথম দুটি মরশুমে প্রাণবন্ত করে তুলেছিল গল্পকে, এবার তাদের ভূমিকা সীমিত এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে কৃত্রিম মনে হয়েছে। অভিনয়ে অবশ্য জিতেন্দ্র কুমার যথারীতি দক্ষ, তবে গল্পের বুনোটে যে ভারসাম্যের অভাব, তা তাঁর অভিনয়ও পূরণ করতে পারেনি। রঘুবীর যাদব, নীনা গুপ্তার মতো অভিজ্ঞ অভিনেতারাও যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তাদের চরিত্রগুলিও এবার অনেকটা ছাঁচে বাঁধা মনে হয়েছে।

এই মরশুমের সবচেয়ে বড় ত্রুটি হল সেই মানবিক অনুভূতির অনুপস্থিতি, যা এই সিরিজের মূল ইউএসপি ছিল। একদিকে রাজনীতির প্রতিহিংসা ও স্নায়ুযুদ্ধ, অন্যদিকে চরিত্রগুলির মধ্যে আন্তরিক সংযোগের অভাব – সব মিলিয়ে ‘পঞ্চায়েত ৩’ যেন একধরনের ক্লান্তিকর উত্তেজনা তৈরি করে, যা দর্শককে আগলে রাখতে পারছে না। সিরিজের শেষ পর্বে পরবর্তী মরশুমের জন্য কিছু ইঙ্গিত রাখা হয়েছে ঠিকই, তবে তাতে এই মরশুমের দুর্বলতা ঢেকে রাখা যায় না। দর্শকদের একাংশ ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, ‘পঞ্চায়েত’-এর সাবলীলতা ও সরলতা ফিরিয়ে আনার দাবি। দেখা যাক, নির্মাতারা পরবর্তী মরশুমে সেই আবেদনকে কতটা গুরুত্ব দেন।

You might also like!