দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগে ফের এক উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এবার চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীকে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে দেখিয়েছে পুলিশ। যদিও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা এই অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।যদিও স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলির দাবি, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীনভাবে চিন্ময় প্রভুকে ফাঁসানো হচ্ছে।
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীকে প্রধান অভিযুক্ত হিসাবে দেখিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী আধিকারিক চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান মঙ্গলবার চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন। তিনি বলেন, “মোট ৩৮ জনকে অভিযুক্ত করে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। মামলার প্রধান অভিযুক্ত চিন্ময় দাস ব্রহ্মচারী।”
তদন্তকারী আধিকারিক জানান, “এই মামলায় প্রাথমিকভাবে অভিযুক্তদের তালিকায় যে ৩১ জনের নাম ছিল, তাদের মধ্যে তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। বাকি ২৮ জনকে অভিযোগপত্রে ‘আসামি’ করা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্তে যাদের নাম এসেছে এমন আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।”
ঘটনার সময় পুলিশ হেফজতে থাকা চিন্ময়কে কেন প্রধান আসামি করা হল? সেই ব্যাখ্যায় তদন্তকারী আধিকারিক মাহফুজুর রহমান বলেন, “সেদিন জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার পর তিনি আদালত প্রাঙ্গনে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছিলেন। তার বক্তব্যের কারণে অন্য আসামিরা উত্তেজিত হয়ে আইনজীবীর উপর হামলা চালায় বলে তদন্তে উঠে এসেছে।” তাঁর ব্যাখ্যা, “হুকুমদাতা হিসেবে চিন্ময় দাস এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত। ইতিপূর্বে গ্রেপ্তার অভিযুক্তদের জবানবন্দি ও জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে হামলার ঘটনায় যারা জড়িত ছিল তাদের অভিযোগপত্রে আসামি হিসাবে দেখানো হয়েছে।”
গত বছর ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গনে চিন্ময়ের অনুগামীদের হট্টগোলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘সারাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে’ সেদিন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়। অভিযোগপত্রে যে ৩৮ জনকে আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি ১৮ জন পলাতক। আইনজীবী আলিফ হত্যার পর গত বছরের ২৯ নভেম্বর তার বাবা জামালউদ্দিন নগরীর কোতোয়ালি থানায় এ মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত চন্দন দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য ও রিপন দাশ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।