দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাম্প্রতিক একটি সফরের সময় সন্তানসহ ভ্রমণ করছিলেন তিনি, আর ঠিক সেই সময়ই সন্তানকে বহনের জন্য প্রয়োজনীয় স্টলার চেয়ে বারবার অনুরোধ জানালেও, তা মেলেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। অভিনেত্রী বললেন, “আমার সম্প্রতি মেরুদণ্ডে অস্ত্রোপচার হয়েছে। ঘুমন্ত কিয়াকে কোলে নিয়ে হাঁটতে পারি না। তাই স্টলার বা প্যারাম্বুলেটর ব্যবহার করি।” অথচ বিমান থেকে নামার পর একরত্তি মেয়ের প্যারাম্বুলেটরটাই পেলেন না অভিনেত্রী! “সঙ্গে ষাটোর্ধ্ব বাবা আর কাকা ছিলেন। আমি পারি না বলে ওঁরাই ঘুমন্ত মেয়েকে কোলে নিয়ে হাঁটলেন!”
ঘটনার পর তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি দীর্ঘ পোস্টে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি লেখেন,প্রযুক্তির যুগ এখন। বাচ্চাদের হাতে হাতে এআই প্রযুক্তি ঘুরছে। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে এক মাকে তাঁর সন্তানের প্যারাম্বুলেটরের জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে! নিজের শহরের এই আচরণে নিজেই লজ্জিত কনীনিকা। তাঁর দাবি, এই সমস্যা একদিনের নয়। একাধিক বার তাঁকে এই যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে বুধবার তিনি প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। নিজের শহরের থেকে আরও একটু মানবিকতা আশা করেছিলেন তিনি।
কিয়ার জন্মদিনের আগে তার বাবা প্রযোজক অনুপম হরির জন্মদিন গিয়েছে। স্বামী-মেয়ের জন্মদিনের উদ্যাপন পালন করতেই সপরিবার কনীনিকা ঘুরতে গিয়েছিলেন তাইল্যান্ড। সেখানে সকলের সঙ্গে খুব মজা করেছেন। নিজের শহরে এত তিক্ত অভিজ্ঞতা তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে, ভাবেননি তিনি। তাঁর কথায়, “আমি কিন্তু ফ্যাশনের জন্য প্যারাম্বুলেটর নিয়ে ঘুরি না।” যুক্তি দিয়েছেন, তাঁর মতো সমস্যা আরও অনেকেরই রয়েছে। অনেকে স্পন্ডেলাইটিসেও ভোগেন। তাঁরাও বাচ্চার জন্য প্যারাম্বুলেটর নিয়ে ঘোরেন। আগামী দিনে তাঁরা তা হলে কী করবেন?
কনীনিকার এই মন্তব্য ঘিরে নেটপাড়ায় শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, আজকের ডিজিটাল ও স্বচ্ছন্দ যাতায়াতের যুগেও ‘মা’দের ছোট ছোট প্রয়োজনের প্রতি যদি এইরকম উদাসীনতা দেখানো হয়, তাহলে ‘ইনক্লুসিভ ট্র্যাভেল’ বা সহানুভূতিশীল পরিষেবা কেবল কথার কথা হয়ে দাঁড়ায়।
তিনি আরও লেখেন, "কোনও সংস্থা কতটা প্রযুক্তিবান, কতটা বিলাসবহুল, সেটাই বড় কথা নয়। তারা একজন মা এবং একটি শিশুর প্রতি কতটা সহানুভূতিশীল, সেটাই প্রকৃত মানবিকতার পরিচয়।"
ঘটনার পর এখনও সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে কনীনিকার এই প্রকাশ্য মন্তব্য ঘিরে বিমানবন্দরের পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।