Breaking News
 
Mamata Banerjee: তৃণমূল টিমকে আটকানোর পরেই মমতার কড়া হুঁশিয়ারি: ‘আমি নিজে যাব, কত দম আছে দেখব!’ Mamata Banerjee:ছটপুজোর প্রসঙ্গ টেনে মমতার আক্রমণ: 'বিহারের জন্য ছাড়, আর উত্তরবঙ্গের ভাড়া ১৮ হাজার! এটা কি বৈষম্য নয়?' Tripura:‘গান্ধীবাদ’ ছেড়ে এবার ‘সুভাষ’ হওয়ার ডাক! ত্রিপুরায় ‘পুলিশি সন্ত্রাস’-এর প্রতিবাদে সরব তৃণমূল TMC: আটক তৃণমূল প্রতিনিধি দল, পুলিশি বাধার মুখে ত্রিপুরা বিমানবন্দর কাঁপল 'সন্ত্রাস' বিরোধী স্লোগানে! Mamata Banerjee : হামলার পর রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা, মমতার হুঁশিয়ারি— ‘শান্ত থাকুন, উসকানিতে পা দেবেন না’ CM Mamata Banerjee:দুর্যোগে বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ— ‘জীবন আগে, দ্রুত নিরাপদ স্থানে যান’

 

Life Style News

2 years ago

Winter flowers:শীতে ফুলের গাছ দিয়েই বাড়ির বারান্দায় আনুন রঙিন ছোঁয়া

Bring a colorful touch to the balcony with winter flowers
Bring a colorful touch to the balcony with winter flowers

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ  শীতের সময় ঘরের মধ্যে মনমরা হয়ে না থেকে কলকাতার মানুষজন কিন্তু বাড়িতেই বসিয়ে ফেলতে পারেন লাল-নীল -সবুজের মেলা। পৃথিবীর অনেক জায়গাতেই শীতের সময় কোনও ফুল ফোটে না। সাদা বরফ ছাড়া আর কোনও রং চোখে ধরা পড়ে না। কিন্তু আমাদের শহরে এই সময় রোদের আলো আর রঙের বাহার, দুই-ই চোখে পড়ে। ফলে মানুষজন ফুলের গাছ বাড়ির ছাদে, সামনের বাগানে এমনকী ঘরের বারান্দায় লাগিয়ে মন ভালো রাখার রাস্তা খুঁজে নিতেই পারেন। বাঞ্ছারামের সেই বাগানের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই – সেই রকম একটা বাগানে শখ কার না হয়! আজকের দিনে বাধ সাধে জায়গায়। শহরতলির ফ্ল্যাট বা বাড়ির পরিসরে বারান্দার জন্য বরাদ্দ জায়গাটুকু সত্যিই কম। কিন্তু তাতে কী? তার জন্য ইচ্ছে পূরণে খামতি থাকবে কেন? হোক না একচিলতে বারান্দা, কিছু প্ল্যানিং এই হতে পারে আপনার সাধ ও সাথে মেলবন্ধন-বারান্দায় বাগান।

১. ডালিয়া ফুল (Dahlia flowers) 

শীতকালীন ফুল এর মধ্যে ডালিয়া খুব বিখ্যাত। বর্ণ বৈচিত্র, বড় আকারের ও নিবাসের জন্য এটি জনপ্রিয়। ডালিয়া গাছের উচ্চতা ১০০ থেকে ১৫০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। ডালিয়া বিভিন্ন রঙের হতে পারে। এই ফুলের নামকরণ হয়েছিল সুইডেনের আন্দ্রেডালের নামানুসারে।


বাড়ির টবে ডালিয়া ফুলের চাষের পদ্ধতিঃ

বাড়িতে ডালিয়া চাষের জন্য একটি বড় আকারের টব জোগাড় করতে হবে।

দোআঁশ মাটি এই ফুল চাষের জন্য ভালো।

ছোট টব হলে ডালিয়ার কাটিং চারা কোন নার্সারি থেকে নিয়ে এসে মাটিতে পুঁতে দিতে হবে।

গাছের সাথে কোনো শক্ত কাঠি বেঁধে দিন। যাতে গাছ নুইয়ে না পড়ে।

এক সপ্তাহ অন্তর অন্তর গাছের গোড়ার রল সার অর্থাৎ সরষের খোল পচা জল দিতে হবে।

মাঝে মাঝে ডগা ছেঁটে দিতে হবে।

ধীরে ধীরে গাছটি বেড়ে উঠবে।


২. সূর্যমুখী (Sunflower)

এটি শীতকালীন ফুল। এটি দেখতে সূর্যের মতো। সূর্যের দিকে মুখ করে থাকার জন্য এর নাম সূর্যমুখী। এর বীজ হাঁস, মুরগী খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়। পৃথিবী বিভিন্ন দেশে এর ব্যাপক চাষ হয়। এই তেল অন্যান্য রান্নার তেলের তুলনায় ভালো।  এই গাছ ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।


বাড়ির টবে সূর্যমুখী ফুলের চাষের পদ্ধতিঃ

নার্সারি থেকে গাছ এর জন্য ভালো বড় বীজ কিনে আনতে হবে।

অল্প ভেজা ভেজা মাটি প্রয়োজন। তাঁর মধ্যে জৈব সার মিশিয়ে মাটিটিকে তৈরি করে নিতে হবে।

টবে মাটিতে বীজটি পুঁতে দিন।

রোজ দুবেলা করে জল দিতে হবে

গাছের গোড়ায় জল জমতে দেওয়া যাবে না।

মাটি স্যাঁতস্যাঁতে থাকলে জল দেবেন না।

একমাস হওয়ার পরই গাছের গোড়ায় বাড়তি সার দিতে হবে।

২ মাস পরিচর্যা করলেই গাছ বড় হবে।


৩. চন্দ্রমল্লিকা (Chandramallika)

সাধারণত অক্টোবর – নভেম্বর মাসে এই গাছের ফুল ফোটে। এই ফুল প্রায় সাড়ে তিন হাজারেরে ধরনের হয়ে থাকে। এই গাছের ফুল প্রায় ২০-২৫ দিন তাজা থাকে।

এই গাছ ২৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। চন্দ্রমল্লিকার আদি নিবাস চীনে। চীনে এটি ঔষুধিগাছ হিসেবে পরিচিত। ফুলগুলি সাধারণত গোলাকার, পুরু ধরনের হয়ে থাকে। পাঁপড়িগুলি লম্বা, উঁচু ও সরু হয়ে থাকে।


বাড়ির টবে চন্দ্রমল্লিকা ফুলের চাষের পদ্ধতিঃ

চন্দ্রমল্লিকার গাছ থেকে ডাল কেটে ছোট পাত্রের মধ্যে জল দিয়ে রেখে দিন।

শিকড় গজিয়ে গেলে টবে মাটির মধ্যে পুঁতে দিতে হবে।

মাটির সঙ্গে সমপরিমাণ গোবর সার দিন।

ফুলের জন্য দরকার ঝলমলে রোদ ও ঠাণ্ডা আবহাওয়া।

নিয়ম করে জল ও সার দিতে হয়।


৪. কসমস (Cosmos) 

কসমস বাহারি রঙের শীতের ফুল। এগুলি অধিকাংশ বিদেশি ফুল। কসমস গাছের ফুলগুলি বাগানে সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। এই ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম হল ” কসমস বিপিন্নাতুস”।

এই ফুলগুলি বৈশিষ্ট হল একই গাছে বিভিন্ন রঙের ফুল ফোটে ( যেমন- সাদা, গোলাপি, বেগুনি, লাল, কমলা, হলুদ ইত্যাদি। ফুলগুলি হালকা সুগন্ধি বিশিষ্ট। ফুলগুলি ৩-৪ সেন্টিমিটার চওড়া হয়ে থাকে। পাতাগুলি খাঁজকাটা হয়


বাড়ির টবে কসমস ফুলের চাষের পদ্ধতিঃ

সমপরিমাণ বাগানের মাটি, নদীর বালি মাটি, ভার্মি কম্পোস্ট (সারের দোকানে পাওয়া যাবেন) ভালোভাবে মিশিয়ে টবে ভরে রাখতে হবে।

নার্সারি থেকে কসমস গাছ লাগিয়ে নিন।

২-৩ দিন ছায়ায় রেখে দিন।

তারপর রোদের রেখে দিতে হবে।

খুব দ্রুত এটি বড়ো হয় ও ফুল ধরে।

এই গাছের রোজ জল দেওয়ার বা বিশেষ সার দরকার পড়ে না।

এই গাছ রোদ ভীষণ পছন্দ করে।

বেশি রোদ থাকলে গাছটিতে ফুল ভালো হবে।


৫. জিনিয়া (Zinnia

ধুসর সবুজ রঙের ক্ষুদ্রাকৃতি এই ফুল বেশ নজরকড়া। এই ফুলের গাছ ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। লাল, গোলাপি, বেগুনি, সাদা রঙের বৈচিত্রময়। এর আদি নিবাস মেক্সিকো।


বাড়ির টবে জিনিয়া ফুলের চাষের পদ্ধতিঃ

বীজের মাধ্যমে এই ফুলের বংশ বিস্তার ভালো হয়।

নার্সারি থেকে জিনিয়ার চারা নিয়ে আসতে হবে।

টবে গাছ রোপন করলে আপনাকে সাত দিন পর পর টবের গোড়ায় তরল সার দিতে হবে।

উর্বর দো-আঁঁশ মাটি এ ফুল উৎপাদনের জন্য বেশি উপযোগী।

নিয়মিত জল দিতে হবে এবং ফুল শুকানো শুরু হলেই ফুল কেটে দিতে হয়।


৬. গাঁদা (Marigold) 

এই ফুলটি খুব জনপ্রিয়। বেশিরভাগ বাড়ির টবে বা বাগানে এই ফুল দেখা যায়। শীত হোক বা গরম সব সময় এই ফুল ফোটে। কিন্তু শীতকালে এর চাষটা বেশি। লাল, হলুদ, কমলা রঙের হয়ে থাকে। গাঁদা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে যেমন- চায়না গাঁদা, রক্ত গাঁদা, দেশি গাঁদা, বড় ইনকা গাঁদা প্রভৃতি।


বাড়ির টবে গাঁদা ফুলের চাষের পদ্ধতিঃ

বাজার থেকে টব এবং গাঁদা ফুলের চারা কিনে আনুন।

দোআঁশ মাটির সঙ্গে জৈব সার মিশিয়ে মাটি তৈরি করে টবে ভরে নিন।

টবের মাটিতে গাঁদা ফুলের চারা লাগিয়ে নিন।

প্রতি সপ্তাহে একদিন অন্তত সরষে পচা জল দেবেন।

প্রতিদিন সকাল- বিকেল জল দিন ধীরে ধীরে গাছ বৃদ্ধি পাবে এবং ফুল ফুটবে।

৭. গোলাপ (Rose) 

গোলাপ সারাবছর এ চাষ হয়ে থাকে। ফুল প্রেমীদের পছন্দের ফুলের তালিকায় গোলাপ শীর্ষ স্থান দখল করে। লাল গোলাপ ভালবাসার প্রতীক হিসাবে চিহ্নিত। এছাড়াও ভিন্ন রঙের হয়ে থাকে।

অধিকাংশ ফুল প্রেমীরা বাড়ির টবে, বাগানে এই সুগন্ধি যুক্ত ফুল লাগান। বিদেশি গোলাপের মধ্যে – এলিজাবেথ, ব্ল্যাক প্রিন্স, রানি এলিজাবেথ, ইরান, রোজ গুজার্ড, কুইন এলিজাবেথ, জুলিয়াস রোজ জনপ্রিয়


বাড়ির টবে গোলাপ ফুলের চাষের পদ্ধতিঃ

নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করে আনতে হবে।

দো-আঁশ মাটি, গোবর সার বা কম্পোস্ট, পাতা পচা সার, একত্রে মিশিয়ে মাটি তৈরি করতে হবে।

মাটি প্রায় এক সপ্তাহ রেখে দিন।

তারপর টবে মাটি ভরে চারাটি বসিয়ে দিন।

মরা ডালপালা ছেঁটে দিন।

দু-তিনদিন অন্তর অন্তর জল দিতে হবে। তবে গাছের গোড়ায় যেন জল না জমে।


৮. ক্যামেলিয়া (Camellia) 

এটি একটি বিদেশি ফুল। সাধারণত ফুলটি সাদা ও লাল রঙের হয়ে থাকে। অনেকটা দেখতে গোলাপের মতো। এক স্তর বা বহু স্তর পাপড়ি যুক্ত হয়ে থাকে। চা গাছের মতো এর পরিচর্যা করতে হয়।

এই ফুলটি সাধারণত বছরে একবারই ফোটে। একবছর সময় লাগে ফুল ফুটতে।


৯. প্যান্সি (Pansy) 

শীতের সব চাইতে সুন্দর ফুল হল প্যান্সি। এটি দেখতে অনেকটা প্রজাপতির মতো। এর গঠনটা অনেকটা আলাদা ধরনের, ফুলের নিচের দিকে তিনটি পাপড়ি থাকে আর উপরের দিকে দুটি।


যা করণীয়

সকালের চা থেকে অফিস ফেরত ক্লান্তি – অবসরযাপনের প্রিয় সঙ্গী এই বারান্দা। যদিও পৃথিবীটা ছোট হতে হতে বারান্দা এখন ব্যালকনির রূপ নিয়েছে। একটু ম্যানেজমেন্ট এর সাহায্যে এখানেই বানিয়ে ফেলুন সাধের বাগান। আপনার ব্যালকনির জায়গা অনুযায়ী কিনে ফেলুন কিছু সুন্দর টব। এখন বাজারে বেশ সুন্দর টব পাওয়া যায় – দেখতে একদম অন্যরকম। হস্তশিল্প মেলাতেও এই ধরনের টব পেয়ে যাবেন। স্পেস ম্যানেজমেন্ট করতে হ্যাঙ্গিং টবও নিতে পারেন – যা আপনার ব্যালকনির রেলিঙে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। এছাড়া অনলাইনে প্লাস্টিকের কালারফুল, ফ্যান্সি সুন্দর টবও পেয়ে যাবেন। ছোট ব্যালকনির কার্নিশে আয়রনের পট হোল্ডার রেখে তাতেও টব বসাতে পারেন। সারাদিনে অন্তত দু’ঘণ্টা রোদ যাতে গাছ পায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। না হলে টব সরিয়ে কমপক্ষে এক দিন অন্তর গাছ রোদে দিন। মনে রাখবেন, যে কোনও গাছের প্রাথমিক শর্ত হল রোদ ও জল। মাঝে মাঝে সার দেওয়ার সাথে সাথে টবের মাটি আলগা করে দিন। সেক্ষেত্রে কেমিক্যাল ফার্টিলাইজার এর কথা না ভেবে ন্যাচারাল শাক সবজির খোসাকেও বেছে নিতে পারেন। মাঝে মাঝে গাছের পাতা ও ডাল প্রয়োজন অনুযায়ী ট্রিম করে নেবেন। তবে ট্রিমিং এর সঠিক সময় বসন্তকাল। এতে গাছ উচ্চতায় কম বেড়ে ঘন হবে। অনলাইনে কিনে নিতে পারেন বাহারি প্ল্যান্ট ট্রিমার। ডাল ট্রিম করার সাথে সাথে পোকায় খাওয়া পাতা ও ডাল অবশ্যই কেটে ফেলবেন – না হলে তা অন্য গাছে ছড়িয়ে পড়বে। পাতা ফ্রেশ রাখার জন্য জলের সাথে এপসম সল্ট মিশিয়ে স্প্রে করুন। লতানে কিছু পাতাবাহার গাছ লাগাতে পারেন। জায়গাও লাগে কম, দেখতেও খুব সুন্দর।

You might also like!