দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরবঙ্গের দুর্যোগ পরিস্থিতি আপাতত কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও বিপর্যয়ের ছাপ এখনো গভীর। সোমবার সকালেই রোদের আভায় মেঘ সরিয়ে দেখা দিয়েছে ঝলমলে কাঞ্চনজঙ্ঘা, তবে প্রকৃতির এই সাময়িক হাসি বাসিন্দাদের কষ্ট লাঘব করতে পারেনি। ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা অতিবৃষ্টির জলে উত্তরবঙ্গের বহু এলাকা এখনো প্লাবিত। কোথাও প্রবল স্রোতে ভেঙে পড়েছে রাস্তা, কোথাও আবার নদীর বেগে বিচ্ছিন্ন হয়েছে সেতু ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মধ্যেই সোমবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং পৌঁছান উত্তরবঙ্গে। সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ও রাজ্য পুলিশের ডিজিপি রাজীব কুমার। আলিপুরদুয়ারের হাসিমারা সেনা ঘাঁটিতে নেমে সেখান থেকে সরাসরি সড়ক পথে নাগরাকাটার দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে যান তিনি।
বিকেল নাগাদ নাগরাকাটার কালীখোলা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাসিন্দাদের সতর্ক করে বললেন, ”আগামী দু, একদিনের মধ্যে ফের জোয়ার আসতে পারে। ওই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখানে রাস্তার ধারে সরকারের তরফে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। যাঁরা এসেছেন, তাঁরা ভালো করেছেন। যাঁরা এখনও নিজের বাড়ি আঁকড়ে রয়েছেন, আপনারা দ্রুত এখানে চলে আসুন।নিরাপদে থাকবেন। খাওয়াদাওয়া নিয়ে ভাবতে হবে না।” প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে গোটা এলাকা পরিদর্শনের পর ভাঙা রাস্তা দেখে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার তা মেরামতের দায়িত্ব নিচ্ছে। এছাড়া যাঁদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, সেসব বাড়িও তৈরি করে দেবে সরকার।
এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রভাবে পড়েছে মিরিকেও। শিলিগুড়ি থেকে সরাসরি মিরিক যাওয়ার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন। সুখিয়া, ঘুম বা কার্শিয়ংয়ে ঘুরপথে যেতে হবে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবারই মিরিক যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। নিজেই জানিয়েছেন, আগামী দু’দিন তিনি থাকবেন উত্তরবঙ্গে। এখনও পর্যন্ত দুর্যোগের বলি ২৩। এর মধ্যে শুধুমাত্র দার্জিলিংয়েই ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিবারের একজনকে হোমগার্ডের চাকরির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।