দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: বিরোধীদের নির্বাচন কমিশন ঘেরাও অভিযানে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল দিল্লি। তুমুল ধস্তাধস্তির মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও আরামবাগের সাংসদ মিতালি বাগ। অন্যদিকে, দিল্লি পুলিশ রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে-সহ একশোরও বেশি সাংসদকে গ্রেপ্তার করে বাসে তুলে নিয়ে যায়।
ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (SIR) নামে ‘ভোটচুরি’র প্রতিবাদে উত্তাল দিল্লি। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ সংসদ ভবন থেকে প্রতিবাদী পদযাত্রা শুরু করেন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। লক্ষ্য ছিল নির্বাচন কমিশনের অফিস ঘেরাও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে পারে, তা অনুমান করে কমিশনের তরফে বিরোধী শিবিরকে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়, এই ইস্যুতে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত কমিশন। সেক্ষেত্রে ৩০ জন প্রতিনিধির নাম পাঠাতে বলা হয়। সময় দেওয়া হয় দুপুর ১২টা। এদিকে বিরোধী সাংসদদের এই মিছিলের অনুমতিও দেওয়া হয়নি দিল্লি পুলিশের তরফে। এই অবস্থায় সংসদ ভবন থেকে মিছিল বের হয়। তৃণমূল সাংসদদের হাতে ছিল বাংলায় লেখা ব্যানার। মিছিল কিছুটা দূর এগোতেই ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকায় পুলিশ। পালটা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন সাংসদরা।
পুলিশি বাধা পেয়ে রাস্তাতেই বসে পড়তে দেখা যায় সাংসদদের। ছিলেন, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। অন্যদিকে শাড়ি পরেই ব্যারিকেডের উপর চড়েন মহুয়া, সুস্মিতা-সহ তৃণমূলের সাংসদরা। ব্যারিকেড টপকে চলে আসেন সপা সাংসদ অখিলেশ যাদব, ভূপেন্দ্র যাদবরা। তাঁদের কোনওমতে ঠেকিয়ে ব্যারিকেডের ওপারে পাঠানোর চেষ্টা হয়। মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে ‘গলি গলি মে শোর হ্যায়, নরেন্দ্র মোদি চোর হ্যায়’। দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ কর্মসূচি চলার পর দিল্লি পুলিশের তরফে গ্রেপ্তার করা হয় রাহুল গান্ধী-সহ বহু সাংসদকে। নিয়ে যাওয়া হয় পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায়।
এদিকে বাসে ওঠার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনি জ্ঞান হারান বলে খবর। এদিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ মিতালি বাগও। রাহুল গান্ধী দুজনেরই দেখভাল করেন। এই ঘটনায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বলেন, “ওরা কথা বলতেই চায় না, কারণ ওরা মুখ লুকোতে চাইছে। সত্যিটা গোটা দেশের সামনে চলে এসেছে। এই লড়াই রাজনৈতিক নয়, সংবিধান বাঁচানোর লড়াই। ফলে আমরা চাই সঠিক ভোটার লিস্ট।” বিজেপিকে একহাত নিয়ে প্রিয়াঙ্কা বললেন, “বিজেপি ভয় পেয়েছে। তাই পুলিশকে ব্যবহার করে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিজেপির পালটা তোপ, “গোটাটাই সাজানো।” বিজেপি নেতা তথা সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “এখনও পর্যন্ত একটি অভিযোগের পক্ষেও প্রমাণ দিতে পারেনি বিরোধীরা।”