দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ এই ব্যস্ত আর চাপের জীবনে অনেকেই খুঁজছেন মানসিক শান্তির পথ। অবসাদ, উদ্বেগ বা স্ট্রেস কাটাতে কেউ যাচ্ছেন মেডিটেশন-এ, কেউ বা মানসিক কাউন্সেলিং-এর সাহায্য নিচ্ছেন। তবে এক বিকল্প ও প্রাকৃতিক উপায়ের দিকেই আজ মনোযোগ বাড়ছে—মিউজ়িক থেরাপি।
* ‘মিউজ়িক থেরাপি’ কী:
মানসিক স্বাস্থ্যের অন্বেষণে এখন অনেকেই বিভিন্ন ধরনের থেরাপির সাহায্য নিয়ে থাকেন। ‘মিউজ়িক থেরাপি’র ক্ষেত্রে এক জন মনোবিদ ক্লায়েন্টের থেরাপির জন্য সঙ্গীতের সাহায্য নিয়ে থাকেন। কখনও সেখানে বাদ্যযন্ত্র বা তালবাদ্যের সাহায্যও নেওয়া হতে পারে। সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের যোগসূত্র সুপ্রাচীন হলেও ‘ক্লিনিক্যাল থেরাপি’ আকারে তার ব্যবহার অপেক্ষাকৃত নবীন প্রয়াস।
* কী ভাবে করা হয় এই থেরাপি?
১. রোগীর মানসিক অবস্থা ও চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সুর বা যন্ত্রসংগীত নির্বাচন করা হয়।
২. কখনও শুধু শুনিয়ে, আবার কখনও রোগীকে গান গাওয়ানো বা বাজাতে উৎসাহিত করা হয়।
৩. এটি একক ভাবে বা গ্রুপ সেশনে করা যেতে পারে।
‘মিউজ়িক থেরাপি’র প্রতিটি সেশন এক থেকে দেড় ঘণ্টার হতে পারে। ব্যক্তিগত ভাবে বা ছোট ছোট দলেও থেরাপি করানো হয়। ব্যক্তির মানসিক পরিস্থিতির উপরে ‘মিউজ়িক থেরাপি’র সেশনের সংখ্যা নির্ভর করে। কারও কারও ক্ষেত্রে দুই থেকে চারটি সেশনে উপকার পাওয়া যায়। আবার এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা অন্য কোনও থেরাপির মতোই (যেমন ফিজ়িওথেরাপি) নির্দিষ্ট সময়ান্তরে ‘মিউজ়িক থেরাপি’ নিয়ে থাকেন। যদি কেউ থেরাপি নিয়ে ভাল থাকেন, তা হলে সেশনের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।
সময়ের সঙ্গে ‘মিউজ়িক থেরাপি’ প্রচারের আলোয় চলে এসেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে সেন্টার রয়েছে। একাধিক বড় হাসপাতালেও আলাদা করে রোগীদের জন্য ‘মিউজ়িক থেরাপি’ ব্যবস্থা করা হয়। বাড়িতে আলাদা করে সেশনের পরিষেবাও দিয়ে থাকেন কেউ কেউ। সাধারণত দলগত থেরাপির থেকে একক স্বাধীন থেরাপির খরচ বেশি। জানা যাচ্ছে, ‘মিউজ়িক থেরাপি’র সেশন প্রতি খরচ ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। শিশু থেকে বৃদ্ধ— সকলের ক্ষেত্রেই প্রয়োজনে এই থেরাপি প্রযোজ্য। বিশেষ করে যারা মানসিক চাপ, উদ্বেগ, ঘুমের সমস্যা, বা আবেগ নিয়ন্ত্রণে সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের
* উপকারিতা:
১. চাপ ও উদ্বেগ কমায়
২. মনোযোগ ও ঘুমের গুণমান বাড়ায়
৩. ডিপ্রেশন ও মন খারাপের সময়ে সহায়ক
৪. অটিজম, ডিমেনশিয়া, আলঝেইমার্সে উপকারী
৫ . ব্যথা কমাতে ও স্নায়ু শিথিল করতে সাহায্য করে
শহরে এখন মিউজ়িক থেরাপির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে সঙ্গীতের ক্ষেত্রে কোনও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড না থাকার কারণে এক এক জন এক এক ভাবে থেরাপি করে থাকেন। আগামী দিনে জীবনের ব্যস্ততা এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ সমাজে শান্তির খোঁজে এই ধরনের থেরাপির গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়বে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।