দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক : ঘরের আদরের সদস্য, ছোট্ট পোষ্যটি যখন খাওয়ার সময় পাশে এসে বসে, জুলজুল করে তাকিয়ে থাকে আপনার দিকে—তখন কি আর না বলা যায়? সেই মায়ায় বাঁধা পড়েই আমরা অনেক সময় নিজেদের প্লেট থেকে তুলে দিই এক টুকরো আম কিংবা একটু তরমুজ। ভাবি, গরমে যেমন আমাদের তৃপ্তি দেয় এই ফল, তেমনই পোষ্যরও ভালো লাগবে।
কিন্তু সেই ভালোবাসার খাতিরেই প্রশ্ন ওঠে—এই ফলগুলি বিড়ালের শরীরের জন্য আদৌ উপযোগী তো? আম কিংবা তরমুজের মতো ফল তাদের হজমের পক্ষে নিরাপদ তো? মমতা থেকে উঠে আসা খাওয়ানোর অভ্যাস কখনও কখনও কি পোষ্যের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াতে পারে না?
পশুচিকিৎসকেরা বলছেন, বিড়াল মাংসাশী প্রাণী। মানুষ যা যা খায়, তার সবটাই যে পোষ্যকে খাওয়ানো যায়, তা নয়। বরং বিড়ালের দৈনন্দিন পুষ্টি প্রাণিজ প্রোটিন থেকেই মিলতে পারে। মার্জারের জন্য উচ্চমাত্রার প্রোটিন, স্বল্পমাত্রার কার্বোহাইড্রেট, কিছু ভিটামিন, খনিজ জরুরি। তবে তার বেশিরভাগটাই প্রাণিজ খাবার থেকেই পেয়ে যায় বিড়াল। আর সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত জল খাওয়া।
সাধারণত বিড়াল ফল খেতে চায় না। তবে ব্যতিক্রমও থাকে। অনেকে আবার মনে করেন তাকে ফল দেওয়া ভাল। আম, আঙুর, তরমুজ অনেক কিছুই বিড়ালকে খাইয়ে দেন। পশু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, তরমুজ বা ফল মাত্রই পোষ্যের জন্য ক্ষতিকর, তা নয়। তবে এগুলি আলাদা করে খাওয়ানোর দরকার নেই। বরং পুষ্টির হেরফেরে বিড়ালের ক্ষতি হতে পারে।
কারও প্রশ্ন থাকে তরমুজ খাওয়ানো যায় কি না। তরমুজ বিড়ালের জন্য বিষাক্ত নয় বলছেন পশুরোগ চিকিৎসক। তবে ডায়াবিটিস থাকলে এই ফল বাদ দেওয়াই ভাল। আবার একটি খাবার তিনটি বিড়ালকে দেওয়া হলে দেখা যাবে, তাদের শরীর আলাদা ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। কারও হয়তো তরমুজ খেয়ে কিছু হল না, কিন্তু কোনও বিড়ালের বমি হল বা পেট খারাপ হল।
একটি বিড়ালকে কতটা খাবার দেওয়া উচিত, তা নির্ভর করে তার প্রজাতি, বয়স ও ওজনের উপর। তবে সেই খাবারে উচ্চমাত্রার প্রোটিন থাকা ভীষণ জরুরি। মাছ, মুরগির মাংস, ডিম থেকেই প্রয়োজনীয় প্রোটিন পেতে পারে তারা। সাধারণত, সব্জি বা ফল তারা খুব একটা খেতে চায় না। তবে ব্যতিক্রমও থাকে।
সে কারণে পুষ্টিবিদেরা বলছেন, বিড়াল যদি ফল খায়, তা খুব অল্পই দিতে হবে। নিয়মিত নয় বরং মাঝেমধ্যে তরমুজ, কলা দেওয়া যেতে পারে। তবে বিড়ালের জন্য সব্জি ভাল মনে করেন কোনও কোনও পশু চিকিৎসক। তা রান্না করে খাওয়ানো যেতে পারে।