দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :সকালের ব্রেকফাস্টে এক গ্লাস কমলালেবুর রস কিংবা বিকেলের নাস্তায় এক কাপ আঙুরের জুস—এই অভ্যাস বহু স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের।প্রাতরাশের অন্য খাবারের সঙ্গে ছোট থেকে বড় সকলের গ্লাসে ঢেলে দেন পুষ্টিকর পানীয় হিসাবে। কিন্তু এই ফলের রসই কি শরীরে বিষ ঢুকিয়ে দিচ্ছে? এক পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, ফলের রস আর যাই হোক পুষ্টিকর নয়। স্বাস্থ্যকর তো নয়ই। বরং যাঁরা ফলের রস খাচ্ছেন, তাঁরা পক্ষান্তরে শরীরকে এক ধরনের ‘বিষ’ দিচ্ছেন, যা ক্ষতি করছে স্বাস্থ্যের।
পুষ্টিবিদের নাম সিদ্ধান্ত ভার্গব। বলিউডে তাঁকে একডাকে চেনেন তারকারা। কারণ অভিনেত্রী আলিয় ভট্ট তাঁর কথা শুনে চলেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আলিয়া কখন কী খাবেন, তা সিদ্ধান্তেরই বেঁধে দেওয়া। শুধু আলিয়াই বা কেন, এ প্রজন্মের নায়িকারাও ভরসা করেন সিদ্ধান্তের পরামর্শে। সারা আলি খান, অনন্যা পাণ্ডে, জাহ্নবী কপূরও সিদ্ধান্তের কথা মেনে চলেন। সেই সিদ্ধান্তই জানাচ্ছেন, ফলের রস আর চিনি গোলা রঙিন জলের মধ্যে খুব বেশি তফাত নেই। কারণ দু’টিই শরীরে এক ধাক্কায় চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
কেন এটি ক্ষতিকর?
ওজন ঝরানোর জন্য চেষ্টা করছেন যাঁরা বা যাঁরা ডায়াবিটিসের রোগী। অথবা যাঁরা শরীর সম্পর্কে সচেতন, তাঁরা জানেন, শরীরের অর্ধেকের বেশি অসুস্থতার মূলে এই ‘ব্লাডসুগার স্পাইক’, অর্থাৎ এক ধাক্কায় রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকখানি বেড়ে যাওয়া। এটি নিয়মিত হতে থাকলে রক্তে শর্করা ভাঙার কাজ করে যে ইনস্যুলিন, যা শর্করাকে ভেঙে শক্তিতে পরিণত করে তা কাজ করা বন্ধ করে দেয়। যাকে বলে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্যান্স। এমন হলে শুধু ওজন বৃদ্ধি বা ডায়াবিটিসের সমস্যা নয়, লিভার, কিডনি, হার্টের সমস্যাও হতে পারে। সিদ্ধান্তও সে কথাই বলেছেন। যার জন্য ফলের রস খেতে বারণ করছেন তিনি।
বিষয়টি আরও একটু বুঝিয়ে তিনি বলছেন, ফলের রস তৈরি করার সময় ফলের জরুরি ফাইবার নষ্ট হয়ে যায়। প্রক্রিয়াকরণের সময় অতিরিক্ত চাপে এবং গরমে ভিটামিন এবং খনিজও নষ্ট হয়। ফলে যে ভিটামিন এবং খনিজ থাকে, তার বেশিটাই আর অবশিষ্ট থাকে না ফলের রসে।
তবে কী করবেন?
আলিয়ার পুষ্টিবিদ বলছেন, ‘‘ফলের রস খাবেন না। বদলে ফল খান।’’ তাতে যে ফাইবার থাকবে তা রক্তে শর্করার মাত্রা এক ধাক্কায় বাড়তে দেবে না। রক্তে শর্করা মিশবে ধীরে ধীরে। ফলে ইনস্যুলিন নিজের কাজ করতে পারবে। শর্করা শক্তিতে পরিণত হবে। অন্য দিকে পুষ্টিগুণও বজায় থাকবে পুরোমাত্রায়।