দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় দুই বছর ধরে হিংসা-বিধ্বস্ত মণিপুরে অবশেষে পা রাখতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সবকিছু ঠিক থাকলে, আগামী ১৩ মে তিনি মণিপুর সফরে যাবেন।
এর আগে, রাজ্যপাল অজয়কুমার ভাল্লার সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং, শীর্ষ আধিকারিক এবং বিজেপি বিধায়করা। এই বৈঠক ঘিরে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। ধারণা করা হচ্ছে, দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্রপতি শাসনের পর মণিপুরে একটি সেরা নতুন সরকার গঠনের লক্ষ্যেই এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, গত রবিবার ইম্ফলে রাজভবনে এই বৈঠক ডেকেছিলেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং, স্পিকার থকচোম সত্যব্রত সিং, বিজেপির রাজ্যসভাপতি শারদা দেবী, মুখ্যসচিব পুনিতকুমার গোয়েল, নিরাপত্তা পরামর্শদাতা কুলদীপ সিং, ডিজিপি রাজীব সিং ও ২৩ জন বিজেপি বিধায়ক। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে চলে এই বৈঠক। তবে ঠিক কী উদ্দেশে এই বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি। তবে এক বিজেপি নেতা জানান, “বৈঠকে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই সঙ্গে কথা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর মণিপুর সফর নিয়েও।” তবে রাজনৈতিক মহলের অনুমান, দীর্ঘ মাস ধরে জ্বলতে থাকা মণিপুর আপাতত কিছুটা শান্ত। এই অবস্থায় রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করে নয়া সরকার গঠনের তৎপরতা শুরু হয়েছে সেই লক্ষ্যেই এই বৈঠক।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্র এবং মণিপুর সরকার কুকি-জো গোষ্ঠীর সঙ্গে একটি নতুন ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তিতেই ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবাধ চলাচলের জন্য খুলে দিতে সম্মত হয়েছে কুকি গোষ্ঠী। এই মহাসড়ক আসলে মণিপুরের জীবনরেখা। ২০২৩ সালের মে থেকে জাতি-সংঘর্ষে জ্বলছে মণিপুর। কুকি-মেতেই সংঘাতের বলি হয়েছেন অন্তত ২৬০ জন। পাশাপাশি ঘরছাড়া হয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি নাগরিক। সেখানে এই চুক্তি নতুন করে আশার আলো। এবার সেই সংঘর্ষদীর্ণ মণিপুরে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর সফরের সম্ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও। সব মিলিয়ে শান্তি ফেরার আশায় বুক বাঁধছেন মণিপুরের বাসিন্দারা।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সাল থেকে মণিপুরে আগুন জ্বলছে। জারি হয়েছে রাষ্ট্রপতি শাসন। তবে প্রায় ২ বছর পেরিয়ে গেলেও একবারও সেখানে যাননি প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীরা বারবার দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে যেন মণিপুরে যান। সেখানকার মানুষের দুরবস্থার ছবি নিজের চোখে দেখে আসুন। কিন্তু সে দাবি কোনও গুরুত্ব পায়নি। মণিপুরে শেষবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পা পড়েছিল ২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মাসে। অর্থাৎ হিংসার ঠিক আগে। এবার তাঁর মণিপুর সফর ও নয়া সরকার গঠনের জল্পনায় প্রত্যাশার পারদ চড়তে শুরু করেছে।