লখনউ, ৯ অক্টোবর : জরুরি অবস্থা ছিল ভারতীয় গণতন্ত্রের সবচেয়ে কালো দাগ, যখন নাগরিক অধিকার এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে কন্ঠরোধ করা হয়েছিল। উত্তর প্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক জরুরি অবস্থা প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, সেই সময়কালে, সংবাদপত্রকে কন্ঠরোধ করা হয়েছিল, নির্যাতন চরমে পৌঁছেছিল এবং কারও বাক অথবা চলাফেরার স্বাধীনতা ছিল না।
উপ-মুখ্যমন্ত্রী পাঠক লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের মালব্য সভাগারে বহুভাষী সংবাদ সংস্থা হিন্দুস্থান সমাচার-এর উদ্যোগে আয়োজিত "জরুরি অবস্থার ৫০ বছর" অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এই উপলক্ষে ‘যুগবার্তা’ ও ‘নবোত্থান' পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়। ব্রজেশ পাঠক বলেন, তৎকালীন কংগ্রেস সরকার গণতন্ত্রকে পুতুল বানিয়ে রাষ্ট্রপতিকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছিল। তিনি বলেন, এখন যারা সংবিধানের কপি বহন করে তারাই সেই আমলে সংবিধান হত্যার জন্য দায়ী। তিনি বলেন, এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত দ্রুত বিকশিত দেশ হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। ব্রজেশ জোর দিয়ে বলেন, বিজেপি ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না, "দেশ সর্বোপরি" নীতিতে কাজ করে।
পরিবহন মন্ত্রী দয়াশঙ্কর সিং বলেছেন, গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামীরা যে সাহসের সঙ্গে জরুরি অবস্থার সময় সংবিধান রক্ষা করেছিলেন, সে কারণেই আজও দেশে গণতন্ত্র এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা বেঁচে আছে। তিনি বলেন, জরুরি অবস্থা ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাসে একটি কলঙ্ক। প্রাক্তন মন্ত্রী সুরেশ রানা বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী শুধুমাত্র নিজের ক্ষমতা বাঁচাতে সারা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। তিনি বলেন, "যে দেশের তরুণরা স্বাধীনতার জন্য ফাঁসির মঞ্চে উঠেছিল, সেই দেশের স্বাধীনতাকে ক্ষমতার লোভে পিষ্ট করা হয়েছিল।" রানা তরুণদের গণতন্ত্রের লড়াইয়ের ইতিহাস শিখে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এই অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত অতিথিরা ১১ জন গণতন্ত্র সংগ্রামীকে বস্ত্র, শঙ্খ ও শংসাপত্র দিয়ে সম্মানিত করেন। সম্মানিত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ভারত দীক্ষিত, রাজেন্দ্র তিওয়ারি, মণিরাম পাল, ভানু প্রতাপ, গঙ্গা প্রসাদ, রমাশঙ্কর ত্রিপাঠি, দিনেশ প্রতাপ সিং, দীনেশ অগ্নিহোত্রী, অজিত সিং, বিশরাম সাগর এবং সুরেশ রাজওয়ানি। লখনউয়ের মেয়র সুষমা খারওয়াল বলেছেন, তিনি বড়দের কাছ থেকে জরুরী অবস্থার বেদনার কথা শুনেছেন এবং সেই সময়ে সরকারী কর্মচারীদের বেতনও আটকে রাখা হয়েছিল। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক অমিত কুশওয়াহা। হিন্দুস্থান সমাচার-এর চেয়ারম্যান অরবিন্দ মার্ডিকার, রাজেন্দ্র সাক্সেনা, স্বামী মুরারি দাস, প্রশান্ত ভাটিয়া, হরিশ শ্রীবাস্তব, অবনীশ ত্যাগী, মনীশ শুক্লা, আনন্দ দুবে, ডঃ হরনাম সিং এবং অনিল-সহ অনেকেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।