Life Style News

1 hour ago

Coconut shell: বাগানের শখ থাকলে নারকেলের খোলা ফেলা পাপ, কাজে লাগান অনন্যভাবে

Coconut Coir in Gardening
Coconut Coir in Gardening

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: এককালে বিজয়া দশমীর সকালে ঘরে ঘরে ভেসে আসত নারকেল নাড়ুর মিষ্টি গন্ধ। কড়াইতে ঘি, চিনি কিংবা গুড়ে পাক দেওয়া নারকেল কোরার সুগন্ধ যেন উৎসবের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলত। তখনকার দিনে নারকেল নাড়ু বানানো ছিল বাঙালি বাড়ির অন্যতম রীতি। সঙ্গে তৈরি হত নারকেল তক্তি, চন্দ্রপুলি—অসংখ্য নারকেল-ভিত্তিক মিষ্টি। আজকের ব্যস্ত জীবনে দোকানেই সহজলভ্য নাড়ু মিললেও, তার স্বাদের সঙ্গে ঘরে বানানো নাড়ুর তুলনা হয় না। এখনও কিছু বাড়ি থেকে দশমীর সকালে সেই ঐতিহ্যের ঘ্রাণ ভেসে আসে, যা মনে করিয়ে দেয় পুরনো দিনের সুখস্মৃতি।

নারকেল নাড়ু বানানোর প্রস্তুতিটিও বেশ জমজমাট। বাজার থেকে আনা নারকেল ছাড়ানো, তার পরে তাকে কোরানো তার পরে তার পাক দেওয়া। আর গরম থাকতে থাকতেই গোল করে পাকিয়ে নেওয়া। এসব তো হল এক দিকের কাজ। অন্য দিকে নারকেল ছাড়ানোর পরে যে ছোবড়া বের হত, সেগুলি আগেকার দিনে ব্যবহার করা হতো ধুনো জ্বালানোর জন্য। এক কালে সন্ধ্যে দেওয়া ধুনো জ্বালানোর রীতি ছিল বাংলার ঘরে ঘরে। তবে এখনও চাইলে ওই নারকেল ছোবড়া ফেলে না দিয়ে কাজে লাগানো যেতে পারে। বিশেষ করে বাড়িতে গাছপালা রয়েছে যাঁদের, বাগান করতে যাঁরা ভালবাসেন, তাঁরা নারকেল ছোবড়া দিয়ে তাঁদের সাজানো বাগানকে আরও তরতাজা করে তুলতে পারেন।

কী ভাবে নারকেল ছোবড়া ব্যবহার করবেন?

১. কোকোপিট বা কোকোডাস্ট তৈরি: 

নারকেলের ছোবড়ার গুঁড়ো বা কোকোপিট হলো মাটির বিকল্প। কোকোপিট তার ওজনের তুলনায় ৮-১০ গুণ পর্যন্ত জল ধরে রাখতে পারে। ফলে গাছে ধীরে ধীরে জল শোষিত হয় এবং ঘন ঘন জল দেওয়ার প্রয়োজন হয় না, ছাদে যাঁরা টবে গাছ করেন, তাঁদের জন্য বিশেষ উপযোগী। এছাড়া কোকোপিট খুব হালকা হওয়ায় এর ভেতরে সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে। ফলে গাছের শিকড় দ্রুত বাড়ে। জলে জমে থাকার সমস্যাও থাকে না।

২. জৈব সার বা হিউমাস তৈরি:

নারকেলের ছোবড়া পচিয়ে জৈব সার বা হিউমাস তৈরি করা যায়। কারণ, ছোবড়ার তুষে উদ্ভিদের প্রয়োজনীয় নানা পুষ্টি উপাদান, বিশেষ করে পটাশিয়াম থাকে। পচানোর পরে এটি মাটিতে মিশে গাছকে পুষ্টি সরবরাহ করে। এ ছাড়া মাটিতে যে উপকারী মাইক্রোবিয়োম থাকে, তাকেও সক্রিয় রাখে এই সার।

৩. মালচিং হিসেবে ব্যবহার:

মালচিং হল মাটির জলধারণ ক্ষমতা বজায় রাখার প্রক্রিয়া। প্রবল গ্রীষ্মে বা শীতে যখন মাটির আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যায়, তখন মালচিংয়ের মাধ্যমে সেই আর্দ্রতা ধরে রাখার ব্যবস্থা করা যায়। নারকেলের ছোবড়া ছিঁড়ে মাটিতে জালের মতো করে বিছিয়ে দিলে মাটির স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় থাকে। পাশাপাশি, আগাছাও জন্মায় না।

৪. জল নিকাশের ক্ষেত্রে:

টবে বা প্ল্যান্টারে জল নিকাশের ব্যবস্থা না রাখলে গাছের শিকড় পচে গিয়ে গাছ নষ্ট হতে পারে, অনেকেই তার জন্য টবের মাটির নীচে বালি বা পাথর দিয়ে কিছুটা স্তর তৈরি করেন। তার বদলে ছোবড়ার টুকরো রেখে দিলে জল সহজেই বেরিয়ে যেতে পারে। মাটি নষ্ট হয় না।

৫. পরিবেশবান্ধব টব:

ছোবড়ার আঁশ থেকে কয়ার পট তৈরি করা যায়। যা বীজ থেকে চারা গাছ বেরোতে সাহায্য করে, এই টবে চারা লাগানোর পর তা সরাসরি মাটি বা বড় টবে বসিয়ে দেওয়া যায়। টবটি সময়ের সাথে সাথে মাটিতে মিশে জৈব সার হিসেবে কাজ করে, যা গাছের শিকড়কে কোনও ভাবে নষ্ট হতে দেয় না।


You might also like!