দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলা ব্যান্ড ‘হুলিগ্যানিজম’-এর প্রধান গায়ক অনির্বাণ ভট্টাচার্য এবং তার দলের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে ইচ্ছা করে সনাতন ধর্মকে অসম্মান করার অভিযোগ এনেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগের ভিত্তিতে লালবাজারের সাইবার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তাদের দাবি, "ব্যান্ডের প্রচারের জন্য অনির্বাণদের গানে ধর্মীয় বিশ্বাস ও অনুভূতিকে আঘাত করা হয়েছে।" যদি পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে অনির্বাণদের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি। লালবাজার কর্তৃপক্ষ বিজেপি নেতা এবং আইনজীবী তরুণজ্যোতি তেওয়ারির অভিযোগটি গ্রহণ করেছে। পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী, তরুণজ্যোতি ইমেল মারফত অভিযোগের সাথে গানের ক্লিপিংসও পাঠিয়েছেন।
এদিকে, দেরিতে হলেও অবশেষে দিলীপ ঘোষও ‘হুলিগানইজমের হুল’ ফোটানো গান নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। হুঁশিয়ারির সুরে শালীনতার সীমা অতিক্রম না করার উপদেশ দিয়েছেন অনির্বাণদের। প্রবীণ বিজেপি নেতার মন্তব্য, “বাকস্বাধীনতা তো সকলের আছে তবে, শালীনতার মাত্রা যেন না ছাড়ায়। রসিকতা যেন শালীনতার বাইরে না যায় কিংবা কারও আদর্শ বা নীতিতে আঘাত না করে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত। শুধুমাত্র জনপ্রিয়তা এবং মনোরঞ্জনের জন্য যাকে যা ইচ্ছে বলার অধিকার কারও নেই। সে বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।” সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবারও নেটপাড়া সরগরম হুলিগানইজম নিয়ে। এদিকে, সাইবার থানার আধিকারিকরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও তরুণজ্যোতির পর্যবেক্ষণ, তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এখনও পুলিশ মামলা শুরু করেছে বলে তাঁর কাছে কোনও খবর নেই। সেক্ষেত্রে তিনি আদালতে যাবেন।
অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের বাংলা রক ব্যান্ড 'হুলিগানিজম'-এর একটি রাজনৈতিক স্যাটায়ার গান সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। ৯ মিনিটের এই গানে 'এসআইআর' (সুপ্রিম কোর্টের রায়ের একটি অংশ) থেকে শুরু করে মন্দির-মসজিদ বিবাদ, সিপিআই(এম)-এর রাজনৈতিক পতন এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের 'রেগে যাওয়ার প্রবণতা' নিয়ে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। কুণাল ঘোষ নিজেই গানটির প্রশংসা করে তার সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেছেন, যা ভাইরাল হয়েছে।
তৃণমূল ছাড়া অন্য দুটি রাজনৈতিক দল— সিপিএম এবং বিজেপি— এই গানের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। সিপিএম তাদের ক্ষোভ সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করলেও, বিজেপি অনির্বাণের ব্যান্ডের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় নেটপাড়ার অনেকেই কটাক্ষ করে বলছেন, যারা বাক স্বাধীনতা নিয়ে বড় বড় কথা বলে, তারাই এখন বাক স্বাধীনতা হরণ করার চেষ্টা করছে।