দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: সংখ্যা তত্ত্বের দিক থেকে পিছিয়ে থাকলেও 'ইন্ডিয়া' জোট আশা করেছিল যে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট কাটাকাটি হলে তা বিরোধী প্রার্থী সুদর্শন রেড্ডির পক্ষে যাবে। কিন্তু বাস্তবে যা ঘটেছে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভোট কাটাকাটি হয়েছে ঠিকই, তবে এর ফলে রেড্ডির জয় আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিজেপি সমর্থিত বিজয়ী প্রার্থী সি.পি. রাধাকৃষ্ণণ ১৪টি অতিরিক্ত ভোট পেয়েছেন। এই অপ্রত্যাশিত ফলাফলের পর 'ইন্ডিয়া' জোটের অন্দরে 'বিশ্বাসঘাতক' খোঁজা শুরু হয়েছে।
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএর জয় নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না। কাগজে-কলমে শাসক জোটের পক্ষে ছিল ৪২৭টি ভোট, তার সঙ্গে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ১১টি ভোট যোগ হওয়ায় মোট ভোটের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৩৮। কিন্তু ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, বিজয়ী প্রার্থী সি.পি. রাধাকৃষ্ণণ পেয়েছেন ৪৫২টি ভোট, যা হিসাবের চেয়ে ১৪টি বেশি। অন্যদিকে, বিরোধী প্রার্থী সুদর্শন রেড্ডি পেয়েছেন মাত্র ৩০০ ভোট এবং তাঁর ১৫টি ভোট বাতিল হয়েছে। এই অপ্রত্যাশিত ফলাফল বিরোধী শিবিরে প্রশ্ন তুলেছে: 'গোপনে এনডিএকে সমর্থন করা সেই ১৪ জন 'বিভীষণ' কারা?' যদিও সেই নামগুলো প্রকাশ্যে আসেনি, তবে অনুমান করা হচ্ছে যে মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডসহ কয়েকটি রাজ্যের বিরোধী দলের সাংসদরা রাধাকৃষ্ণণকে ভোট দিয়েছেন।
এই ঘটনায় ইন্ডিয়া জোটের তরফে কোনও বিবৃতি সামনে না এলেও সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিজেপির এক নেতা বলেন, মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল থাকার সুবাদে রাধাকৃষ্ণণের কিছুটা প্রভাব রয়েছে। কিছু বিরোধী নেতা ভোট কাটাকাটির দায় আম আদমি পার্টি ও উদ্ধবের শিবসেনার ঘাড়ে চাপিয়েছেন। যেমন আপ সাংসদ স্বাতী মালিওয়াল এখন আপ বিমুখ। তাঁর ভোট গিয়েছে ইন্ডিয়ার পক্ষে। উদ্ধবের শিবসেনায় বিরাট ভাঙনের পরও বহু নেতা বিজেপি ঘনিষ্ঠ একনাথ শিন্ডের শিবসেনার দিকে ঝুঁকে। তাঁদের ভোটও গিয়েছে রাধাকৃষ্ণণের দিকে। যদিও এই দুই দল ভোট কাটাকাটিতে তাঁদের দলের যোগ অস্বীকার করেছেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এই নির্বাচনে এনডিএ’র শক্তি ছিল ৪২৭টি এবং তারা আরও ২৫টি ভোট পেয়েছে। এই ঘটনায় স্পষ্ট যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দেশ সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব এনডিএ এবং বিজেপির বিরুদ্ধে দাঁড়ানো নেতাদের মধ্যেও দৃশ্যমান।’
উল্লেখ্য, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ৭৮১ ভোটের ইলেকটোরাল কলেজের মধ্যে ১৪ জন সাংসদ অনুপস্থিত ছিলেন। ভোট দেন ৭৬৭ জন সাংসদ। এর মধ্যে বাতিল ঘোষণা করা হয় ১৫টি ভোটকে। এর মধ্যে ৪৫২টি ভোট পেয়েছেন রাধাকৃষ্ণণ এবং ৩০০ ভোট পেয়েছেন সুদর্শন রেড্ডি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে পদ্ধতিগত ভুলের জন্য ১৫টি ভোট বাতিল হয়েছে। এই ১৫টি ভোট কাদের সেটা অবশ্য এখনও জানা যায়নি।