দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: স্বাধীনতা দিবসের হাতে গোনা মাত্র চারদিন বাকি। তার আগে ফের প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজধানীর লালকেল্লার নিরাপত্তা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও দেশের শীর্ষস্থানীয় ভিভিআইপিদের উপস্থিতিতে যে ঐতিহাসিক স্থান থেকে ১৫ আগস্টের ভাষণ দেওয়া হবে, সেখানে নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকা সত্ত্বেও ঢুকে পড়ল বোমা-সহ এক ‘ডামি’ জঙ্গি। ঘটনায় হতবাক ওয়াকিবহাল মহল, তীব্র সমালোচনার মুখে দিল্লি পুলিশ।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে লালকেল্লার নিরাপত্তা ব্যবস্থার খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখতে বিশেষ মক ড্রিলের আয়োজন করেছিল নিরাপত্তা বিভাগ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সাদা পোশাকে কিছু নিরাপত্তা আধিকারিককে ‘ডামি জঙ্গি’ সেজে ভেতরে প্রবেশের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের হাতে ছিল নকল বোমা, উদ্দেশ্য ছিল নিরাপত্তা ঘেরাটোপে সম্ভাব্য ফাঁকফোকর খুঁজে বের করা। কিন্তু অবাক করা বিষয়, একাধিক স্তরের মেটাল ডিটেক্টর ও কড়া নজরদারির মধ্যেও কোনও বাধা ছাড়াই তারা ভেতরে ঢুকে পড়ে।
শুধু তাই নয়, ভেতরে ঢোকার আগে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে হাসিমুখে সেলফিও তোলে ওই ‘জঙ্গি’ সেজে থাকা আধিকারিকরা। এই ঘটনায় স্পষ্ট, লালকেল্লার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় এখনও ভয়ঙ্কর ফাঁক রয়ে গিয়েছে। যে জায়গায় মশা পর্যন্ত ঢোকার সুযোগ নেই বলে দাবি করা হয়, সেখানে বোমা-সহ সাজানো জঙ্গির অবাধ প্রবেশ নিরাপত্তা কাঠামোর বিশ্বাসযোগ্যতাকেই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাল।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, “লালকেল্লার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লাগাতার মক ড্রিল চলছে। এটা সেই মক ড্রিলেরই একটি অংশ। নিরাপত্তায় যাতে কোনও রকম গলদ না থাকে তা নিশ্চিত করা পর্যন্ত এই মকড্রিল জারি থাকবে। গলদ থাকলেও এর আগে আমরা একাধিকবার সফল হয়েছে। বহুবার মকড্রিলে ডামি জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৫টি মক ড্রিল হয়েছে এখানে।” যদিও এই ঘটনা প্রথমবার নয়, এই মকড্রিলের সময় এর আগেও পুলিশকে বোকা বানিয়ে লালকেল্লায় ঢুকতে সক্ষম হয়েছে নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যরা। এই নিয়ে ৩ বার প্রকাশ্যে এসেছে নিরাপত্তার গলদ।
প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা চত্বর নিরাপত্তার সর্বোচ্চ স্তরে ঢাকা থাকে। ভেতরে প্রবেশের আগে প্রতিটি মানুষ ও সরঞ্জাম খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু এ বছরের এই মক ড্রিলের ফলাফল যেন ‘বজ্র আটুনি ফস্কা গেরো’-র জীবন্ত উদাহরণ। ঘটনায় ওয়াকিবহাল মহলের মন্তব্য, যদি প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা কর্মীরাও বোমা-সহ এত সহজে ঢুকে পড়তে পারে, তাহলে প্রকৃত সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি অস্বীকার করার উপায় নেই।