দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়ো রোডে তৃণমূলের আধখোলা মঞ্চে উপস্থিত হয়ে একবারেই সবার নজর কেড়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে তিনি বিজেপি ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সরাসরি আক্রমণ শানালেন। মমতা বলেন, "আর্মিকে যখন বিজেপির কথায় চলতে হয় তখন দেশটা কোথায় যায়, সেটা নিয়ে সন্দেহ জাগে।"
মঞ্চটি গান্ধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের তরফে প্রতিবাদ কর্মসূচির জন্য স্থাপন করা হয়েছিল। তবে কিছুক্ষণ আগে সেনাবাহিনী মঞ্চ খুলে দেয়। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গান্ধী মূর্তির কাছে মঞ্চ স্থাপনের দীর্ঘ মেয়াদি অনুমতি নেই। অন্যদিকে তৃণমূল দাবি করেছে, অনুমতি নিয়ে প্রতিবাদ মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছিল। বাংলাভাষীদের উপর অতিরিক্ত নির্যাতনের অভিযোগে প্রতি সপ্তাহের শনি ও রবিবার গান্ধী মূর্তির কাছে প্রতিবাদ কর্মসূচি দেখানো হয় তৃণমূলের পক্ষ থেকে। মঞ্চ খুলে দেওয়ায় মমতা ক্ষুব্ধ প্রকাশ করেছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি আধখোলা মঞ্চের উপর উঠেই বলেন, "আমাদের মাইকের কানেকশন কেটে দিয়েছে। স্টেজ ভেঙে দিয়েছে। প্যান্ডেল আর্মিকে দিয়ে খুলিয়েছে। আমার আর্মির বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই। তার কারণ, উই আর প্রাউড অফ আওয়ার আর্মি। কিন্তু, আর্মিকে যখন বিজেপির কথায় চলতে হয় তখন দেশটা কোথায় যায়, সেটা নিয়ে সন্দেহ জাগে। এখানে গাড়ি চলাচলের কোনও অসুবিধা নেই। কোনও রাস্তা বন্ধ নেই। আমাদের কর্মসূচি শনি ও রবিবার দুই দিন করে হয়। বিভিন্ন অর্গানাইজেশন ভাষা আন্দোলন নিয়ে অনুষ্ঠান করে। তার জন্য আমাদের অনুমতিও নেওয়া ছিল। প্রয়োজনে আমাদের বলত। পুলিশ বাহিনীকে বলত। দরকার হলে পুলিশ বাহিনী আমাদের পার্টির সঙ্গে কথা বলে আমাদের প্যান্ডেল খুলে দিতে পারত। আমরাই খুলে দিতাম। আমরা অন্য জায়গায় শিফ্ট করতে পারতাম। কিন্তু, সেটা না করে মহাত্মা গান্ধী যিনি আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় নেতা, সেই মূর্তির পাদদেশে আমরা সব অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিবাদ করি। কিন্তু, আমি যখন আসছিলাম, তখন প্রায় ২০০-র মতো সেনা আমাকে দেখে ছুটি পালাচ্ছিল। আমি বললাম, আপনারা পালাচ্ছেন কেন ? আপনারা আমার বন্ধু। আমরা আপনাদের নিয়ে গর্বিত। এটা আপনাদের দোষ নয়। আপনারা বিজেপির কথায় করেছেন। দিল্লির কথায় করেছেন। দিল্লির প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথায় করেছেন। এটুকু বুদ্ধি আমাদের আছে। আমি সেনাকে দোষ দিচ্ছি না। আমি বিজেপি দলটাকে দোষ দিচ্ছি, তাদের মন্ত্রীদের দোষ দিচ্ছি। ওরা যদি রাজনৈতিক দলের মঞ্চ খুলে দেওয়ার জন্য সেনার এভাবে অপব্যবহার করে...।"
প্রসঙ্গত, এ ঘটনায় রাজ্য সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্বের ছাপ স্পষ্টভাবে দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এটি আগামী দিনের রাজনৈতিক উত্তাপকে আরও তীব্র করতে পারে।