দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: সামাজিক মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে তা সম্ভবত কেপি শর্মা ওলি স্বপ্নেও ভাবেননি। জেন জেড (Gen Z) বিক্ষোভের জেরে শুধু যে সরকারের পতন হয়েছে তা-ই নয়, এভারেস্টের এই দেশটি এখনও সহিংসতায় জ্বলছে। এই গুরুতর পরিস্থিতি সামাল দিতে নেপালে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। অশান্তি থামাতে তারা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে এবং সেই সঙ্গে বিকেল ৫টা থেকে দেশজুড়ে কারফিউ জারির ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে, নেপালে বসবাসকারী ভারতীয়দের জন্য নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
মঙ্গলবার যত বেলা গড়িয়েছে, তত জনতার হাতে চলে গিয়েছে রাজধানী কাঠমান্ডু। সংসদ ভবন, সিংহদুয়ার, মন্ত্রীদের বাসভবন ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা। বিক্ষোভকারীরা পুড়িয়ে দিল নেপালের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারির বাড়ি। এমন পরিস্থিতিতেই প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পদত্যাগ করেন। যা গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পাউডেল। বর্তমানে সেনা শাসনে রয়েছে নেপাল। সেনার তরফে এক বিবৃতিতে জেন জি-কে দেশে শান্তি ফেরানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। জায়গায় জায়গায় করা হচ্ছে রুটমার্চ। দেশবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে শান্ত থাকার। বুধবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেনার তরফে জানানো হয়েছে ৫ টার পর থেকে দেশজুড়ে কারফিউ জারির। শোনা যাচ্ছে,
অন্যদিকে, নেপালের যুব সমাজের তরফে নতুন সরকার গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। সংবিধান খোলনলচে বদলে ফেলার পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে। যে সব সাংসদরা রয়েছেন তাদের সকলের ইস্তফার দাবি তোলা হয়েছে। পরিস্থিতি নজরে রেখে নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র। বিদেশমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে কেউ যেন নেপাল সফর না করেন। যারা সেখানে রয়েছেন তাদেরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতীয়দের জন্য ফোন নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে। সীমান্তের ক্রসিং পয়েন্ট বন্ধ করা হয়েছে। নেপালের সঙ্গে ভারতের প্রায় ১,৭৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ভারতের উত্তরাখণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্য নেপালের সীমান্তবর্তী। নেপালের বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পাঁচ রাজ্যেই সীমান্তে তৎপরতা বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর নেপালে নিষিদ্ধ হয় ফেসবুক, ইউটিউব, এক্স-সহ প্রায় সব ধরনের সোশাল মিডিয়া। সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা নেপাল প্রশাসনের সঙ্গে সরকারি ভাবে নথিবদ্ধ হয়নি। সাতদিনের ডেডলাইন দিলেও তা মেনে চলেনি ২৬টি সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের একটিও। তাই এই কড়া সিদ্ধান্ত নেয় কাঠমান্ডু সরকার। এমন সিদ্ধান্তেই বেজয় ক্ষেপেছে নেপালের ‘জেন জি’। সোমবার হাজার হাজার প্রতিবাদী কাঠমান্ডুর রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখান। রাতের মধ্যে তা হিংসাত্মক চেহারা নেয়। এরপর মঙ্গলবার আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বাড়ে। এই পরিস্থিতিতে জনরোষের মুখে পড়ে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন ওলি।