দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: টানা বৃষ্টির জেরে উত্তরপ্রদেশের ১৭টি জেলায় দেখা দিয়েছে প্রবল বন্যা পরিস্থিতি। বহু এলাকায় নদীর জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে সংকটজনক অবস্থা বারাণসী ও প্রয়াগরাজে। পরিস্থিতি বিবেচনায় বারাণসীর সমস্ত স্কুল বুধবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। এদিকে সোমবার প্লাবিত এলাকাগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বারাণসীতে যান রাজ্যের মন্ত্রী সুরেশ কুমার।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, বারাণসীর প্লাবিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেছেন তিনি। সেখানকার লোকজনের কথা বলেছেন। যে ভাবে উদ্ধারকাজ হচ্ছে, তা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সকলের উচিত প্রশাসনকে সহযোগিতা করা।’’ সোমবার থেকেই বারাণসীর নিচু এলাকাগুলিতে গঙ্গার জলের স্তর বেড়েছে। আওর বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি যে আরও খারাপ হবে, সেই আতঙ্কেই ভুগছেন স্থানীয়েরা। লাগাতার বৃষ্টির জেরে গঙ্গার জলস্তর বিপদসীমা ছুঁয়ে ফেলেছে বারাণসী এবং প্রয়াগরাজে। এই পরিস্থিতিতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তাই গঙ্গার ঘাটগুলিতে নজরদারি চালানো হচ্ছে। গঙ্গায় ফেরি চলাচল সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বারাণসীর অলিগলিতে গঙ্গার জল ঢুকে পড়েছে। নমো ঘাট, অস্সি ঘাট ডুবে গিয়েছে। বসতি এলাকায় জল ঢুকে পড়ায় নৌকা করে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, গঙ্গা ছাড়াও যমুনা এবং বেতোয়ার মতো নদীগুলি ফুলেফেঁপে উঠেছে। কোথাও কোথাও জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বারাণসী, প্রয়াগরাজ ছাড়াও মির্জাপুর, গাজ়িপুর, বালিয়া, অরাইয়া, কল্পি, হামিরপুর এবং বান্দায় নদীর জলস্তর বাড়তে থাকায় আতঙ্ক বাড়ছে। কেন্দ্রীয় জল কমিশনের রিপোর্ট বলছে, সোমবার গঙ্গার জলস্তর ছিল ৭২.০৫ মিটার। ঘণ্টায় ০.৫ সেন্টিমিটার করে জলস্তর বাড়ছে। বিপদসীমা হল ৭১.২৬ মিটার। সেই সীমাও ছাড়িয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্লাবিত জেলাগুলিতে নজরদারি এবং ত্রাণকাজ চালানোর জন্য ১১টি দল গঠন করেছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজ নিয়ে কোনও রকম গাফিলতি সহ্য করা হবে না। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের সর্ব ক্ষণ সতর্ক থাকতে এবং নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, মঙ্গলবারেও ভারী বৃষ্টি হবে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায়। ফলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হতে পারে। রাজ্যে ইতিমধ্যেই বৃষ্টি এবং বন্যা পরিস্থিতিতে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যে জেলাগুলি প্লাবিত হয়েছে সেগুলি হল, কানপুর নগর, লখিমপুর খেড়ি, আগরা, অরাইয়া, চিত্রকূট, বালিয়া, বান্দা, গাজ়িপুর, মির্জাপুর, প্রয়াগরাজ, বারাণসী, চন্দৌলি, জালাউন, কানপুর দেহাত, হামিরপুর, এটাওয়া এবং ফতেপুর।