দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক : ‘সানডে হোক বা মনডে, রোজ খাও আন্ডে’—এক সময় এই জনপ্রিয় স্লোগানটি ডিম খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার বার্তা দিত। ডিমের উপকারিতা তুলে ধরতেই এই প্রচার চালিয়েছিল ন্যাশনাল এগ কো-অর্ডিনেশন কমিটি। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, আজও এই বার্তাটি সমানভাবে প্রাসঙ্গিক—কারণ ডিমে রয়েছে একাধিক পুষ্টিগুণ যা শরীরের সার্বিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।
একটি ডিম থেকে শক্তি মেলে ৭৮ ক্যালোরি। এতে প্রোটিন থাকে ৬.৩ গ্রাম, ফ্যাট ৫.৩ গ্রাম। এ ছাড়াও এতে মেলে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। ভিটামিন বি১২, ভিটামিন এ, ফসফরাস, সেলিনিয়াম-সহ একাধিক খনিজ। ডিমকে তাই সস্তায় পুষ্টিকর বলা চলে। কিন্তু রোজ যে ডিম খাবেন, ক’টা করে? একটা, দুটো, তিনটে, না কি তার বেশি? এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা দিনের শুরুটা ডিমের পোচ দিয়ে করলেন, দুপুরে ভাতের পাতে ডিম খাওয়া হল, আবার রাতে গিয়েও ডিম। তা ছাড়া অনেকেই ডিমের কারি, ভাত হলে একসঙ্গে দু'টি ডিম খান। তাই সারা দিনে তিনটি ডিম খাওয়া মোটেই অস্বাভাবিক বিষয় নয়।
এত পুষ্টিগুণ থাকা সত্ত্বেও একসঙ্গে তিনটি ডিম খাওয়া সকলের জন্য ভাল নয়, বলছেন আর এক পুষ্টিবিদ কণিকা মলহোত্র। কারণ, একটি ডিমে ১৮৬ মিলিগ্রামের কোলেস্টেরল মেলে। বিশেষত, যাঁদের ওজন বেশি, হার্টের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য দিনে তিনটি ডিম খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। শম্পার পরামর্শ, উচ্চ কোলেস্টরেলর সমস্যা থাকলে এক দিন অন্তর একটি করে ডিম খাওয়া ভাল।
কতগুলি ডিম দিনে খাওয়া দরকার?
শিশু থেকে বয়স্ক— সকলেই ডিম খেতে পারেন। বিশেষত বয়স্ক মানুষ, যাঁরা মাংস খান না বা মাছ খেতে পছন্দ করেন না, তাঁরা একটি ডিম খেলে শরীর অনেকটাই প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে। তবে শম্পা বলছেন, এক বছরের কম বয়সি শিশুদের ডিমের কুসুম দেওয়া যেতে পারে। সাদাটা খাওয়াতে বারণ করা হয়, কারণ ডিমের এই অংশটি থেকে শিশুদের অ্যালার্জির ঝুঁকি থাকে। তবে এক বছরের পর থেকে ডিমের দুটো অংশই খাওয়ানো যেতে পারে। নিয়মিত একটি ডিম খাওয়াই যথেষ্ট। তবে শরীরচর্চা বেশি হলে দিনে দু’টি খাওয়া যেতে পারে।
প্রোটিনের চাহিদা পূরণে তিনটি ডিম কি যথেষ্ট?
তিনটি ডিমে ১৮-২১ গ্রামের মতো প্রোটিন মেলে। শরীরচর্চার পর বা যাঁদের কায়িক শ্রম বেশি হয়, শুধু এইটুকু প্রোটিন তাঁদের জন্য যথেষ্ট নয়। তা ছাড়া শুধু ডিম নয়, শরীরের জন্য অন্য খাবারেরও প্রয়োজনীয়তা থাকে। তাই শুধু ডিম খেয়ে শরীরের প্রোটিনের চাহিদাপূরণ সমর্থন করেন না পুষ্টিবিদেরাও। ডিমের ভিতরে থাকা ‘অ্যাভিডিন’ নামের গ্লাইকোপ্রোটিন শরীরের ভিতরে বায়োটিন শোষণে বাধা দেয়। বায়োটিন শরীরের খুব প্রয়োজনীয় উপাদান। চুল ভাল রাখতে ও ত্বক-নখের গঠনে সাহায্য করে এটি। বরং তাঁদের পরামর্শ, পেশাদার কারও সাহায্য নিয়ে দৈনন্দিন ডায়েট ঠিক করা দরকার। একই সঙ্গে তাঁরা মনে করাচ্ছেন, ডিমের গুণাগুণ পেতে হলে সেটি সেদ্ধ করে খাওয়া দরকার। বেশি তেলে অমলেট করলে, স্বাদ বাড়বে ঠিকই, কিন্তু গুণ কমে যাবে।