মৌসুমী সেনগুপ্ত,কলকাতা, ১৩ জুন : “সবারই সব কিছু পুড়ে ছাই হয়েছে। জানতে ইচ্ছে করছে রমেশ নামের একটি লোক কী করে বেঁচে ফিরেছেন, কী করে তাঁর হাতে ছিল তাঁর অক্ষত মোবাইল ফোন। নিশ্চয়ই একদিন এই অবিশ্বাস্য কাহিনীটি তিনি বর্ণনা করবেন। আর সেই লোকটি, কী যেন নাম তাঁর,শেষ মুহুর্তে আজকের টিকিট ক্যান্সেল করে সোমবারের টিকিট কেটেছেন?” বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে এভাবেই প্রতিক্রিয়া দিলেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবার তিনি এ ব্যাপারে ফের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “এখনও তদন্ত চলছে। তদন্তের পর বের হবে বোয়িং ৭৮৭এর এমন দুঃখজনক দুর্ঘটনার আসল কারণ।
ভাবছি একটা লোক দিল্লি থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭ বিমানে সেদিন সকালেই আহমেদাবাদ আসার সময় খুব বিরক্ত হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিলেন, 'বিমানের ভেতর এসি চলছে না, লাইট জ্বলছে না, টিভি চলছে না। মানুষ গরমে বিমানের ম্যাগাজিন দিয়ে গায়ে হাওয়া করছে।' জানি না এই বিমানটিই সেই দুর্ঘটনার বিমান কি না, এই বিমানটিই দিল্লি থেকে আহমেদাবাদ গিয়ে তারপর লণ্ডনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল কি না। যদি একই বিমান হয়ে থাকে, তাহলে কি যান্ত্রিক কোনও গোলযোগ ছিল?
এর আগের পোস্টে আমি পাখির আঘাতে বিমান দুর্ঘটনার সম্ভাবনার কথা লিখেছি। ভারতের অন্য বিমান-বন্দরের চেয়েও আহমেদাবাদ বিমান- বন্দরে বিমানের সঙ্গে অতিথি পাখি আর ময়ুরের ধাক্কা লাগে বেশি। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসে ১৫টি পাখির আঘাতের ঘটনা ঘটে। ২০১৮ সালে ঘটে ৮৫টি পাখির আঘাতের ঘটনা। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত যত আঘাত ঘটেছে পাখির, সবচেয়ে বেশি ঘটেছে ওই ২০১৮ সালেই। আহমেদাবাদ বিমান বন্দরে পাখিদের ওড়াওড়ি না হয় বেশি। কিন্তু বোয়িং ৭৮৭টি পাখির আঘাতের কারণে উড়তে পারেনি, এমন কথা এখনও তদন্তকারী বিশেষজ্ঞরা বলেননি। ফেসবুকে দেখলাম অনেকেই প্রতীক যোশীর পরিবারের ছবি দিচ্ছেন, আর দুঃখ করছেন। সফট ওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার প্রতীক যোশী তাঁর তিন সন্তান আর ডাক্তার স্ত্রীকে নিয়ে লণ্ডনে যাচ্ছিলেন। ওখানেই সেটল হবেন, সুখের সংসার করবেন তাঁরা। অথচ ছাই হয়ে গেলেন সবাই। স্বপ্ন পূরণ হলো না। শুধু প্রতীক যোশী নয়, প্রতিটি যাত্রীরই জীবনের গল্প ছিল, সাধ আহলাদ ছিল, স্বপ্ন ছিল।”