ভোপাল, ৪ অক্টোবর : মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে ১২ জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় একটি কাফ সিরাপ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠছে, ওই কাফ সিরাপ খাওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুরা, এরপরই মৃত্যু হয়। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের কাফ সিরাপ দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার বিশেষ নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার ডিরেক্টর জেনারেল অফ হেলথ সার্ভিসেসের (ডিজিএইচএস)-এর তরফে জারি করা ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ২ বছরের কম বয়সি শিশুদের কাফ সিরাপ দেওয়া যাবে না। ৫ বছরের কম বা তার বেশি বয়সি শিশুদের এই ধরনের ওষুধ খাওয়ানো যাবে। তবে তা চিকিৎসকের প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়েই করতে হবে। সঠিক ডোজ় ব্যবহার করার সঙ্গে ওষুধটি সঠিক কাজ করছে কি না, সে দিকেও নজর রাখতে হবে। এ ছাড়াও ওই ওষুধের সঙ্গে রোগীর অন্য কোনও ওষুধ চলছে কি না, তাও খেয়াল রাখতে হবে।
সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে ডিজিএইচএস সুনীতা শর্মা এই চিঠি পাঠিয়েছেন। শুধু কাফ সিরাপ নয়, সর্দিকাশির ওষুধ ২ বছরের নীচে ব্যবহার না করাই উচিত বলেছেন ডিজিএইচএস। কারণ, ৫ বছরের নীচে এই ধরনের অ্যান্টিটাসিভ ও অ্যান্টিঅ্যালার্জিক কম্বিনেশনের ওষুধ রেকমেন্ডেড নয়। তার বেশি বয়স হলেও প্রেসক্রিপশনে সাবধানে সর্দিকাশির ওষুধ লিখতে বলা হয়েছে চিকিৎসকদের। কারণ, ঠান্ডা লাগার উপসর্গগুলো কয়েকদিনের মধ্যে ওষুধ ছাড়াই কমে যায়।
তবে সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে যে কাফ সিরাপের যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তাতে ডাইথাইলিন গ্লাইকল বা ইথালিন গ্লাইকলের কোনও উপস্থিতি পাওয়া যায়নি, যা থেকে কিডনির ক্ষতি হতে পারে। যে সব জায়গায় শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, সেখান থেকেই এই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
তবে কেন্দ্র যখন টক্সিন থাকার অভিযোগ নস্যাৎ করেছে, তখন নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে শিশুদের মৃত্যুর কারণ নিয়ে। শুধুমাত্র মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়ায় নয় শিশুর মৃত্যু হয়েছে কিডনি বিকল হয়ে। আরও পাঁচজনের চিকিৎসা চলছে নাগপুরে।
তবে যে কাফ সিরাপের কারণে এই মৃত্যু বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, সেগুলি ইতিমধ্যেই বাতিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। গত আগস্ট মাস থেকে এই বিষয়টি সামনে আসতে শুরু করে। পারাসিয়া নামে একটি গ্রামে পরপর পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয় কাফ সিরাপ খাওয়ার পরই। এছাড়া গত এক সপ্তাহে রাজস্থানে তিন শিশুর মৃত্যু হয়েছে একইভাবে।
সে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর কাফ সিরাপের কারণে মৃত্যুর কথা অস্বীকার করেছে। তবে ওই কাফ সিরাপের ডিস্ট্রিবিউশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। জানা যাচ্ছে, ওই শিশুদের মৃত্যুর আগে বমি, দুর্বলতা, অস্থিরতার মতো লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। কোনও কোনও শিশু অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। পুরো পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।