বঙাইগাঁও / কাটিগড়া (অসম), ২৪ জুন : অসমে চলমান অবৈধ বাংলাদেশি পাকড়াও, পুশব্যাক এবং গ্ৰেফতার অভিযানের মধ্যে এবার বঙাইগাঁওয়ে আরও দুই অবৈধ বাংলাদেশিকে আটক করেছে পুলিশ। এরা জাল ভারতীয় নথি ব্যবহার করে মুম্বাইগামী ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করলে নিউ বঙাইগাঁওয়ে রেলওয়ে স্টেশনে কর্তব্যরত জিআরপি এবং আরপিএফ- কর্মীদের হাতে ধরা পড়েছে। তাদের হেফাজত থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে তৈরি জাল ভারতীয় নথিপত্র।
নিউ বঙাইগাঁও রেলস্টেশনে অবস্থিত জিআরপি থানার ওসি আজ মঙ্গলবার জানিয়েছেন, আরপিএফ-এর সঙ্গে পরিচালিত যৌথ অভিযানে দুই বাংলাদেশি নাগরিকদের আটক করা হয়েছে। নিউ বঙাইগাঁও জংশন থেকে তাম্বারাম এক্সপ্রেসে ওঠার সময় প্রথমে মহম্মদ গোলাম রব্বানি নামের বাংলাদেশিকে আটক করে জিআরপি। এর পর তার ভাই আসারুল ইসলামকে রেলস্টেশন চত্বরে সন্দেহজনকভাবে পায়চারির সময় আটক করে আরপিএফ। সতর্ক রেলওয়ে নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। তিনি জানান, এই দুই ভাই বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। তারা মেঘালয়ের অন্তৰ্গত ডাউকির ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবৰ্তী চোরাপথ দিয়ে দালালের হাত ধরে এপারে এসেছিল।
ধৃতদের প্রদত্ত স্বীকারোক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে জিআরপি অফিসার জানান, মেঘালয় থেকে অসম হয়ে তারা মুম্বাই পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। ধৃত গোলাম রব্বানি এবং তার ভাই আসারুল ইসলামের উদ্দেশ্য ছিল, মুম্বাই গিয়ে তারা শ্রমিক হিসেবে কাজ করবে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রদত্ত স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে জিআরপি অফিসার জানান, তাদের হেফাজত থেকে পশ্চিমবঙ্গে তৈরিকৃত জাল ভারতীয় আধার কার্ড ইত্যাদি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে প্রকাশ, একটি বৃহত্তর আন্তঃসীমান্ত নেটওয়ার্ক ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে পরিকল্পিতভাবে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী প্রবেশ করাচ্ছে। ওই নেটওয়ার্কের তথ্য বের করতে ধৃত দুজনকে হেফাজতে নিয়ে গোয়েন্দা ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ২২ এবং ২৩ জুন কাছাড় জেলার অন্তর্গত কাটিগড়া পুলিশের পৃথক অভিযানে গুজরাট থেকে আগত শিশু, মহিলা এবং পুরুষ সহ ২২ জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত বাংলাদেশিরা গত ৬ বছর ধরে সুরাটে শ্রমিকের কাজ করছিলেন।
কতিপয় দালালের সহায়তায় তারা আন্তর্জাতিক সীমান্ত পাড় হয়ে বাংলাদেশে ফেরার সময় স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ করে স্থানীয়রা তাদের আটক করেছিলেন। কাটিগড়া থানা সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে প্রায় ১০০ জন অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকজনকে ভারতীয় অভিবাসন আইন অনুযায়ী পুশব্যাক করেছে বর্ডার পুলিশ।