দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ২০২৩ সালে বিজ্ঞাপন থেকে টুইটারের আয় ২৮ শতাংশ কমবে। এক তথ্য বিশ্লেষণকারী সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। তারা বলেছে, টুইটারের বিজ্ঞাপন আয় কমার মূল কারণ ইলন মাস্ক।
২০২৩ সালে বিজ্ঞাপন থেকে টুইটার আয় করবে ৪৭৪ কোটি ডলার। কিন্তু সেই পূর্বাভাস তারা এক-তৃতীয়াংশ কমিয়েছে। এখন তারা বলছে, চলতি বছর বিজ্ঞাপন থেকে টুইটারের আয় হতে পারে ২৯৮ কোটি ডলার। জেসমিন এঙ্গবার্গ বলেন, ‘মূল সমস্যা হচ্ছে, বিজ্ঞাপনদাতারা ইলন মাস্ককে বিশ্বাস করেন না।’ এতে কোম্পানির ব্যবসা মার খাচ্ছে।
এ পরিস্থিতিতে জেসমিনের পরামর্শ, টুইটারকে কোম্পানির প্রোফাইল থেকে মাস্কের ব্যক্তিগত ভাবমূর্তির ছায়া সরিয়ে নিতে হবে। এতে বিজ্ঞাপনদাতারা আবার আস্থা ফিরে পেতে পারেন। তখন কোম্পানির আয় বাড়বে।
গত বছর টুইটারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোম্পানিতে রীতিমতো ঝড় বয়ে যাচ্ছে। দায়িত্ব নেওয়ার পরই মাস্ক টুইটারের কনটেন্ট বা আধেয় সম্পাদনার লাগাম আলগা করে দেন এবং সাত হাজার কর্মীর মধ্যে অর্ধেকই ছাঁটাই করেন। তখন থেকেই বিজ্ঞাপনদাতারা মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন।
গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাথম্যাটিকস জানিয়েছে, মাস্ক দায়িত্ব নেওয়ার পর জানুয়ারি মাসে টুইটারের শীর্ষ ৩০ বিজ্ঞাপনদাতার মধ্যে ১৪টি সংস্থা বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেয়।
সেই পরিস্থিতিতে মাস্ক ক্ষতি পোষাতে বিভিন্ন সেবায় মাশুল আরোপ করেন। কিন্তু ইনসাইডার মনে করে, তাতেও কাজ হবে না। বিজ্ঞাপন থেকে যে রাজস্ব হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে, তার ক্ষতি মাশুলযুক্ত সেবা দিয়ে পোষানো যাবে না।
এদিকে মাস্কের কারণে টুইটারে সময় ব্যয়ের পরিমাণও কমিয়ে দিয়েছেন ব্যবহারকারীরা। ইনসাইডারের পূর্বাভাস, টিকটক ব্যবহারকারীরা যেখানে দিনে গড়ে এক ঘণ্টা এ প্ল্যাটফর্মে ব্যয় করেন, সেখানে টুইটার ব্যবহারকারীদের গড় সময় দিনে ৩৪ মিনিটে নেমে আসতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় কনটেন্ট বা আধেয় হচ্ছে ভিডিও। এ ক্ষেত্রে টিকটক সবার চেয়ে এগিয়ে। ভিডিও প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টিকটকের সঙ্গে পেরে উঠছে না টুইটার। সেই সঙ্গে মাস্ক আসার পর টুইটারে ঘৃণা ভাষ্য প্রচার বেড়ে গেছে।
জেসমিন এঙ্গবার্গ আরও বলেন, ‘টুইটার এখনো সংবাদ শেয়ারের ওপর নির্ভরশীল।’ তার পিছিয়ে পড়ার এটাও একটি কারণ। এ ছাড়া মাস্কের বিষয়ে শুরুতে যত আগ্রহ মানুষের মধ্যে ছিল, এখন আর তা নেই।
গত বছরের ২৭ অক্টোবর টুইটারের নিয়ন্ত্রণ হাতে পাওয়ার পর মাস্ক বলেন, ‘আমি কেন টুইটার কিনলাম, তা ব্যক্তিগতভাবে সবাইকে জানাতে চাই। মানবতার ভবিষ্যতের খাতিরে সব পক্ষের স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য ডিজিটাল মঞ্চ থাকা উচিত। যেখানে সুস্থ পরিবেশে কোনো ধরনের জোরজবরদস্তি ছাড়াই বিভিন্ন বিষয়ের মতামতের বিতর্ক হতে পারে।’
টুইটারের সর্বেসর্বা হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কঠোর সিদ্ধান্ত নেন মাস্ক। শুরুতেই ছাঁটাই করেন টুইটারের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী পরাগ আগরওয়াল, আইন কর্মকর্তা বিজয়া গাড্ডে, প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা নেড সিগাল ও জেনারেল কাউন্সেল শিন এজেটকে।
এরপর শুরু হয় গণছাঁটাই। অনেক কর্মী ছাঁটাই হওয়ার আগে নিজেরাই চাকরি ছেড়ে দেন। এতে টুইটারের ভাবমূর্তির ব্যাপক ক্ষতি হয়। পরিণামে তার বিজ্ঞাপন আয় কমে যাচ্ছে।