দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: "এই ছবিটা যেন কথা বলে..."—এক সময় কল্পনায় বলা হতো এমন কথা। কিন্তু প্রযুক্তির দুনিয়ায় আজ তা আর শুধুই কল্পনা নয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের কল্যাণে সেই কথার ছবিই যেন আজ সত্যিই কথা বলতে শুরু করেছে। ফেলে আসা শৈশব, প্রিয়জনের অস্পষ্ট মুখ, অ্যালবামের পাতায় ধুলো জমা স্মৃতিগুলোকে যেন নতুন জীবন দিচ্ছে এই আধুনিক প্রযুক্তি। একটা সময় ছিল যখন ছবি মানেই ফ্রেমে বন্দি স্থির মুহূর্ত। কিন্তু এখন আর তা নয়, সেই ছবি হয়ে উঠছে প্রাণবন্ত। ৮০ বা ৯০-এর দশকের অ্যানালগ ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলিকেও এখন ‘লাইভ’ করে তোলা সম্ভব। বিভিন্ন এআই টুলের মাধ্যমে সেই পুরনো ছবি শুধু স্পষ্টই নয়, এমনকি চলমান মুখাবয়ব ও মুখের অভিব্যক্তিও ফুটিয়ে তোলা যাচ্ছে।
বিশেষত, বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে যে কেউ খুব সহজেই তার অ্যালবামের পুরনো ছবিকে ‘এনিমেটেড’ করতে পারেন। যেমন ধরুন, দাদু বা ঠাকুমার একটি পুরনো সাদা-কালো ছবিতে প্রাণসঞ্চার করে দেখা যাবে, তাঁরা যেন মুচকি হাসছেন কিংবা চোখের পাতায় ক্ষণিকের চাহনি! আবার ভাই-বোনের স্থির ছবিতে প্রকাশ পাবে শৈশবের খুনসুটি। কীভাবে কাজ করে এই প্রযুক্তি? এআই নির্ভর মডেল একটি স্থির ছবিকে নানা রকম facial landmarks বা মুখাবয়বের বিন্যাস বিশ্লেষণ করে, তারপর একটি তৈরি করা ভিডিও বা মুভমেন্ট প্যাটার্নের সঙ্গে মেলান। ফলে সেই স্থির মুখই ধীরে ধীরে কথা বলা বা চোখ নাড়া, মাথা ঘোরানোর মতো কাজ করতে সক্ষম হয়। অনেকটা হ্যারি পটারের জাদুর জগতে থাকা ম্যাজিক্যাল ছবির মতোই দেখতে লাগবে।
নিম্নলিখিত ধাপ অনুসরণ করে আজই বানিয়ে নিন ‘জীবন্ত’ ছবি –
১) নানা অ্যাপ থেকেই করা যায়। যার অন্যতম ‘পিক্সভার্স’। এর জন্য অ্যাপটি ইনস্টলও করার দরকার নেই। প্রথমে গুগলের সার্চবক্সে লিখুন ‘পিক্সভার্স এআই’। তারপর সেটি পেলে ক্লিক করুন। তারপর লগইন করুন। আপনার ইমেল আইডি ব্যবহার করতে পারেন।
২) সেখানে আপনার পুরনো ছবির ‘ইমেজ’টি আপলোড করে দিন। ধরা যাক ছবিটি আপনার কিংবা আপনার কোনও আপনজনের ছোটবেলার ছবির।
৩) এক্ষেত্রে প্রম্পটে লিখুন ‘আ চাইল্ড স্মাইলিং’। তারপর বেছে নিন ছবির রেজোলিউশন।
৪) এবার দেখুন ম্যাজিক। পুরনো ছবিটি থেকে হয়ে যাবে ভিডিও। যেন পুরনো সময় ফের জীবন্ত হয়ে উঠবে।
এছাড়াও অন্য বিভিন্ন এআই অ্যাপ রয়েছে, যেখানে এই ফিচার রয়েছে। এছাড়াও এই ধরনের অ্যাপ থেকে নানা ধরেন এডিট করতে পারবেন। সামান্য খরচে সাধারণ প্রম্পটেই অনেক মজার ছবি বা ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। যার মধ্যে অন্যতম মেটা এআই। এখন এখানেও থাকছে ভিডিও এডিটিং। আপাতত কিছু বাছাই করা অঞ্চলে এটি লভ্য হলেও অচিরেই এই নয়া টুল সকলেই ব্যবহার করতে পারবেন। তাই অনুমান করাই যায়, স্বল্প সময়ের মধ্যে ভিডিও এডিটিং জগৎ-এ রচিত হবে এক উজ্জ্বল অধ্যায়।