দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: রবি ঠাকুর সাহিত্য, সঙ্গীত এবং শিল্পে তাঁর অসাধারণ অবদানের জন্য বিশ্বজুড়ে সম্মানিত, পশ্চিমবঙ্গের কিংবদন্তি বাঙালি কবি, লেখক, চিত্রশিল্পী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক কবিগুরু আজও ভারতের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে চলেছেন । এবছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী অর্থ্যাৎ রবীন্দ্র জয়ন্তী ১৬৪ তম বর্ষে পদার্পণ করলো। এই বিশেষ দিনের ইতিহাস,তাৎপর্য সম্পর্কে আজকের প্রতিবেদনে বিস্তারিত বর্ণিত হলো।
গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালের ৭ মে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মা সারদা দেবী ছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলার এক স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব, যিনি আধুনিকতার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্য, সঙ্গীত এবং ভারতীয় শিল্পে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছিলেন। বাঙালি নবজাগরণের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব রবি ঠাকুর ছিলেন একজন দূরদর্শী শিক্ষাবিদ যিনি ঐতিহ্যবাহী শ্রেণীকক্ষ শিক্ষাদানে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন এবং পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
* ইতিহাসের পাতায় রবীন্দ্র জয়ন্তী: ইতিহাসের পাতায় তাঁর সৃষ্টি চিরস্মরণীয়। তাঁর সাহিত্যিক কীর্তি, সঙ্গীত সৃষ্টি, শিক্ষা ও সমাজসংস্কারে অবদান তাঁকে বিশ্বের দরবারে ‘বিশ্বকবি’ উপাধিতে ভূষিত করেছে। ১৯১৩ সালে তিনি প্রথম এশীয় হিসেবে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন তাঁর ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য। এমনকি তিনি ভারতের জন্য জন গণ মন এবং বাংলাদেশের জন্য আমার সোনার বাংলা এই দুটি জাতীয় সঙ্গীত রচনায় অনন্য গৌরব অর্জন করেছেন।
* রবীন্দ্র জয়ন্তীর তাৎপর্য: এটি শুধু একটি জন্মদিনই নয়, এই দিনটি বাঙালির আবেগের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রবীন্দ্র জয়ন্তী বাঙালির সংস্কৃতি ও জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। বিশ্বকবির সৃষ্টি চেতনা আজও মানুষের মননে সমান প্রাসঙ্গিক। এই দিনটি প্রজন্মের পর প্রজন্মকে তাঁর মানবিক দর্শন, শিল্প-সাহিত্য ও জীবনদর্শনের সঙ্গে যুক্ত করতে অনুপ্রাণিত করে।
* উদ্যাপনের নানান ধারা: রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সংস্থা বা সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত হয় আলোচনা সভা। এছাড়াও রবীন্দ্র সংগীত, আবৃত্তি ও নৃত্যনাট্যের মাধ্যমে এই মহতী দিবস পালিত হয়ে থাকে। বর্তমানে অনলাইন মাধ্যমেও রবীন্দ্র উদ্যাপন এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে—ফেসবুক, ইউটিউব ও অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রবীন্দ্র বিষয়ভিত্তিক সঙ্গীত, নৃত্য পরিবেশনা সহ নানান শৈল্পিক দক্ষতা প্রদর্শন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যাবহারকারীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে উদযাপিত পঁচিশে বৈশাখের অনুষ্ঠানে আবাল বৃদ্ধবণিতা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বেশ মনোরম পরিবেশে রচিত করে।
তাই আজও বিশ্বকবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বাংলার ঘরে ঘরে শোনা যায় রবি কবিতা—"এবার ফিরাও মোরে, দেবতার কাছে"।