দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :শিল্পনৈপুণ্যের আসল স্বীকৃতি বোধহয় মিলল মঙ্গলবারই। আনজুমানারা বেগম ও মর্জিনা শেখের স্টলে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে হাতে শাড়ি ও গয়না পছন্দ করে কিনলেন। শুধু তাই নয়, আগামীতেও কেনার আশ্বাস দিয়ে গেলেন তিনি। শিল্পীদের ভাষায়, “রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আমরা রাজ্যের বাইরে গিয়ে জিনিসপত্র বিক্রি করেছি, প্রশংসাও পেয়েছি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী নিজে পুজোর আগে আমাদের সামগ্রী কিনবেন— এটা ভাবতেই পারিনি। এর চেয়ে বড় পুরস্কার আর কিছু হতে পারে না, এটিই আমাদের কাজের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি।”
মঙ্গলবার বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুল মাঠে প্রশাসনিক সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূল মঞ্চের পাশেই স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের স্টল করা হয়েছিল। দুপুর দেড়টা নাগাদ মাঠে প্রবেশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মূলমঞ্চে ওঠার আগে সটান হাজির হন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের স্টলে। নিজে একটি শাড়ি পছন্দ করেন। পাশাপাশি, কিছু গয়নাও পছন্দ করেন। তার পর প্যাকেট করে দিতে বলেন। সব মিলিয়ে নগদে ১০ হাজার টাকা দেন মহিলাদের। মুখ্যমন্ত্রী সভাস্থল ছেড়ে যাওয়ার পরেও ওই মহিলারা যেন ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারেননি। আনজুমানারা বেগম জানান, কাঁথা স্টিচের শাড়ি কিনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যার দাম ৯ হাজার টাকা। এছাড়া চুড়ি, গলার হার কিনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যার দাম ১ হাজার টাকা। নগদে সব কিছু কিনেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম-২ ব্লকের ভেদিয়ার বাসিন্দা এই স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। তাঁরা ‘অজয় মহিলা দল’-এর সদস্য। মূলত কাঁথা স্টিচ ও হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরি করে বিক্রি করেন তাঁরা। দলের আর এক সদস্য মর্জিনা শেখ বলেন, “আমরা ভাবতেই পারিনি মুখ্যমন্ত্রী আসবেন আমাদের স্টলে। মঞ্চে ওঠার আগেই আমাদের স্টলে এলেন। আমাদের বললেন, এগুলো তোমরা নিজেদের হাতে তৈরি করো আমি জানি। তোমরা খুব ভালো হাতের কাজ করো।” তার পরই শাড়ি ও গয়না পছন্দ করে কেনেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই মহিলারা জানান, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে গোষ্ঠী গঠন করে তাঁরা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছেন। শিল্পনৈপুণ্যের স্বীকৃতিও পেয়েছেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁদের সামগ্রী কেনায় তাঁরা আরও উৎসাহিত হয়েছেন। অনুপ্রেরণার কাজ করবে মুখ্যমন্ত্রী নিজে সামগ্রী কেনায়। তবে একটা আফসোস তাঁদের, “দিদি এলেন, কিন্তু তাঁর সঙ্গে আমরা একটাও ছবি তুলতে পারলাম না।” এই আফসোস হয়তো জীবনভর থেকে যাবে মর্জিনাদের।