দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :জীবনের অনেক সময়ই এমন আসে, যখন মনে হয় একাই রওনা হওয়া যাক স্বপ্নের গন্তব্যের পথে। সমাজমাধ্যমে একলা ভ্রমণকারীদের শেয়ার করা অভিজ্ঞতা সেই ভাবনাকে আরও উসকে দেয়, সাহসও জোগায়। মনে লুকিয়ে থাকা ইচ্ছেটি ডানা মেলতে চায়, কিন্তু কোথাও না কোথাও ভয়ের এক অদৃশ্য স্রোত দোদুল্যমান থেকে যায়। তখনই প্রশ্ন জাগে—আসলেই কি একা ভ্রমণ সম্ভব?
১। অনেকেই সফরের শুরুটা করেন দূরের গন্তব্য দিয়ে। তবে মনে ভয় থাকলে তা কাটিয়ে ওঠার জন্য নিজের শহরে বা কাছাকাছি কোথাও দিনের দিনেই ঘুরে আসতে পারেন। একলা সফরের ইচ্ছা থাকলেও, অনেক সময় মনে কুণ্ঠা রয়ে যায়। একলা ক্যাফেতে বসা, ঘোরাঘুরি অস্বস্তিকর বোধ হয়। সে কারণে মানসিক প্রস্তুতির দরকার হয়। ছোট ছোট সফর করে দেখতে পারেন, আদৌ তা উপভোগ্য হচ্ছে কি না।
২। বেড়ানোর উদ্দেশ্য এক এক জনের কাছে এক এক রকম। কারও মনে চায়, পাহাড়ের কোলে ছোট্ট একটা কাঠের বাড়ি থাকবে, সেখানেই সময় কাটবে। বাইরে বেরোলে নদী থাকবে, পাহাড়, পাখির ডাক শুনে অলস সময় কাটানো যাবে। কেউ চান, পছন্দের জায়গাটি যথা সম্ভব ভাল করে ঘুরে দেখতে। কেউ চান, বেড়াতে গিয়ে যোগাভ্যাস শিখতে, শান্ত পরিবেশে নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেতে। উদ্দেশ্য বুঝে স্থান নির্বাচন এবং সফর পরিকল্পনা করা দরকার।
৩। নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত প্রথম বার একলা সফর করলে মনে চাপা উত্তেজনা এবং একই সঙ্গে ভয় থাকে। টাকা, মোবাইলের মতো জিনিস সফরে খোয়া গেলে ভীষণ বিপদে পড়তে হতে পারে। সেই কারণে একটি ছোট্ট ব্যাগে খুব জরুরি জিনিস ভরে এমন ভাবে রাখতে হবে, যাতে সেটি এক মুহূর্তের জন্যও কাছছাড়া করতে না হয়। এমনকি, শৌচালয়ে গেলেও নিয়ে যাওয়া যায়।
৪। প্রথম বার সফর করলে এমন প্রশ্ন থাকে নিজের সঙ্গ কি আদৌ উপভোগ্য? একলা কী ভাবে বেড়ানো উপভোগ্য হবে? সকলেই যে নিজের সঙ্গ উপভোগ করতে পারবেন, তা নয়। এ ক্ষেত্রে একলা সফর কেন করতে চান, সেই উদ্দেশ্য স্পষ্ট হওয়া দরকার। সঙ্গে রাখতে পারেন পছন্দের বই, মোবাইলে রাখতে পারেন পছন্দের গানের তালিকা। যে জায়গায় যাচ্ছেন সেই জায়গার ক্যাফেতে চলে যেতে পারেন দিনের শেষে। আড্ডা জুড়তে পারেন হোম স্টে-র কর্মীদের সঙ্গেও। স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে মেলামেশাও সফরের অঙ্গ হতে পারে।
৫। খেতে ভালবাসলে বেরিয়ে পড়া যায় স্থানীয় খাবারের স্বাদ নিতে। যাওয়ার আগে সেই জায়গার জনপ্রিয় খাবার, ক্যাফে, রেস্তরাঁ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে পারেন। দার্জিলিং, পুরী, বেনারস, গ্যাংটক— এমন অনেক জায়গাই শুধু খাবারের টানেই যাওয়া যায়।
৬। সম্পূর্ণ সফর যেমন আগাম পরিকল্পনা করা যায়, তেমনই সেখানে গিয়েও নতুন ভাবে ভাবা যেতে পারে। পরিবেশ, পরিস্থিতি অনুযায়ী সফরের ভাবনা পাল্টাতে পারে। প্রতি রাতে ঠিক করে রাখতে পারেন, পরের দিন কী কী করবেন?
৭। বেড়াতে গিয়ে নিজেকেও সময় দিতে পারেন। কেরল থেকে গোয়া— বিভিন্ন জায়গায় স্পায়ের আরাম নিতে পারেন। সালোঁয় গিয়ে কিছু ক্ষণ নিজের যত্নও নিতে পারেন। ইদানীং স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ছুটির ঠিকানায় যাওয়ার প্রথা বেশ জনপ্রিয়। এর পোশাকি নাম ‘ওয়েলনেস ট্রাভেল’। শুধু হাওয়াবদল নয়, বরং শেখানে গিয়ে শরীরচর্চা করে তরতাজা হয়ে ওঠাই এমন সফরের উদ্দেশ্য।