Health

6 hours ago

Health Tips: ছোটখাটো ব্যথা নয়, হতে পারে বড় অসুখের ইঙ্গিত! পায়ের সমস্যায় সময় থাকতেই নিন সতর্কতা

Foot Pain and Problems
Foot Pain and Problems

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: হাঁটতে গিয়ে গোড়ালিতে চিনচিনে ব্যথা? সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে হাঁটু যেন আর উঠতেই চায় না? অথবা মাঝরাতে ঘুমের মধ্যেই হঠাৎ পায়ের পেশিতে টান, তীব্র যন্ত্রণায় কঁকিয়ে ওঠা—এই ধরনের অভিজ্ঞতা কি পরিচিত মনে হচ্ছে? প্রতিদিনের জীবনে এই ছোটখাটো ব্যথা আমরা অনেকেই খুব একটা গুরুত্ব দিইনা। ভাবি, একটু  বিশ্রাম নিলেই ঠিক হয়ে যাবে। কেউ তেল মালিশ করে, কেউ আবার ব্যথানাশক খেয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা বলছেন, এই অবহেলার ফল হতে পারে ভয়ানক। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, পায়ের বিভিন্ন জায়গায় এমন বারবার ব্যথা বা অস্বস্তি কোনও বড় শারীরিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। এমনকি ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, রক্তনালীর সমস্যা, অথবা স্নায়ুজনিত জটিল অসুখের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবেও ধরা পড়তে পারে এসব উপসর্গ।

• গোড়ালি ও পায়ের পাতাঃ সকালে ঘুম থেকে উঠে মাটিতে পা ফেলতেই গোড়ালিতে ব্যথা হয়? এই লক্ষণের নাম ‘প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস’। পায়ের পাতার তলায় থাকা ‘প্ল্যান্টার ফাসিয়া’ নামক লিগামেন্টে প্রদাহের কারণে এই সমস্যা হয়। তবে শুধু তাই নয়, রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে ‘গাউট’ বা গেঁটে বাতের কারণেও গোড়ালি বা  পায়ের বুড়ো আঙুল ফুলে লাল হয়ে তীব্র ব্যথা হতে পারে।

• কাফ মাসলের ব্যথাঃ গভীর রাতে বা ভোরের দিকে পায়ের কাফ মাসলে তীব্র খিঁচুনি বা টান (ক্র্যাম্প) ধরার অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। মূলত শরীরে জল কমে গেলে (ডিহাইড্রেশন) এবং পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজের ঘাটতি হলে এই সমস্যা দেখা দেয়।

• পায়ের অসাড়তাঃ ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে পায়ে কড়া বা কর্ন দেখা যায়। কিন্তু এই ধরনের ক্ষততে ব্যথা বা অনুভূতিহীনতা অত্যন্ত ঝুঁকির সঙ্কেত। একে ‘ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি’ বলা হয়। স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক সময়ে ডায়াবেটিস রোগী আঘাত পেলেও টের পান না, যা থেকে পায়ে মারাত্মক ঘা বা ‘গ্যাংগ্রিন’ পর্যন্ত হতে পারে।

• হাঁটু ও অন্যান্য গাঁটঃ 

 * অস্টিওআর্থ্রাইটিস: মূলত বয়সজনিত কারণে বা গাঁটের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে কার্টিলেজ ক্ষয়ে গিয়ে এই সমস্যা হয়। এতে হাঁটাচলা, সিঁড়ি ভাঙা বা বসার সময় হাঁটুতে ব্যথা ও শক্তভাব অনুভূত হয়।

 * রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস: এটি একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজেই অস্থিসন্ধিকে আক্রমণ করে। এর ফলে শুধু হাঁটু নয়, শরীরের একাধিক গাঁটে একসঙ্গে যন্ত্রণা হতে পারে, সঙ্গে থাকে ফোলা ভাব।

• পায়ে ঝিঁ ঝিঁ বা অবশ ভাবঃ অনেকক্ষণ একভাবে বসে থাকলে বা শুলে পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরাটা স্বাভাবিক। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক হলেই তা সেরে যায়। কিন্তু কোনও কারণ ছাড়াই যদি বারবার পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরে, সুচ ফোটানোর মতো অনুভূতি হয় বা একাংশ অবশ হয়ে যায়, তবে তা স্নায়ুরোগের লক্ষণ হতে পারে। ভিটামিন বি১২-এর অভাব, থাইরয়েডের সমস্যা বা ‘সায়াটিকা’ (কোমরের স্নায়ুতে চাপ পড়ার কারণে) থেকে এই ধরনের অনুভূতি হতে পারে।

প্রবাদে আছে, “যেকোনও রোগ আগে থেকে ধরা পড়লে তার চিকিৎসা সহজ। উপসর্গ উপেক্ষা করলে ভবিষ্যতে বড় বিপদ হতে পারে।” তাই পায়ের যে কোনও ব্যথা বা অস্বস্তি হালকা করে না দেখে সময় থাকতেই ব্যবস্থা নিন — নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকুন।

You might also like!