দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতার মাঝেই ভারতবর্ষে শুরু হয়েছিল ঐতিহাসিক ভারত ছাড়ো আন্দোলন। সেই আন্দোলন ব্রিটিশ শাসনের ভিত নড়িয়ে দিয়েছিল, স্বাধীনতার পথে এনে দিয়েছিল নতুন গতি। আর এই আন্দোলনে অসংখ্য নারী নির্ভীকভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দেশের জন্য। তাঁদের অপরাজেয় সাহস, ত্যাগ আর দেশপ্রেম যেন প্রকৃত মাতৃশক্তির প্রতীক। এবারের হাতিবাগান নবীন পল্লীর দুর্গাপুজোও তাই এই ভাবনায় ভর করে—‘আমাদের দেশ, আমাদের দুর্গা’। মণ্ডপসজ্জায় স্মরণ করা হবে সেই অজানা-অচেনা বীরাঙ্গনাদের, যাঁদের সংগ্রাম ইতিহাসের পাতায় কিছুটা লুকিয়ে আছে, আর যাঁরা আজও পরিচিত নাম হয়ে অনুপ্রেরণা জোগান।
কলকাতার মানচিত্রে নতুন পাড়া যোগ হয়েছিল গত ২০২৩ সালে। সৌজন্যে হাতিবাগান নবীন পল্লী। উত্তর কলকাতার আবোল-তাবোল পাড়া সাড়া ফেলেছিল বাঙালির মনে। ২০২৪-এ তা বদলে হয়ে যায় থিয়েটার পাড়া। বাঙালির পেশাদারি থিয়েটারের দীর্ঘ ঐতিহ্যই সেবার পুজোর বিষয়ভাবনা হয়ে উঠে এসেছিল নবীন পল্লীতে। আর এবার গত দু’বারের থেকে আলাদা অথচ একই রকম অভিনব পরিকল্পনা করেছেন উদ্যোক্তারা।
৮ আগস্টই শুরু হয়েছিল ভারত ছাড়ো আন্দোলন। তাই আজকের দিনটিকেই পুজো ভাবনা ঘোষণা করার দিন হিসেবে বেছে নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৪- ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের নিষ্ঠুর দমন পীড়ন নীতিকে উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষের রক্তক্ষয়ী এই সংগ্রাম ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনের ভিতকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। আর সেই আন্দোলনে নারীদের সক্রিয় যোগদান ইতিহাসের পাতায় এক অনন্য নজির সৃষ্টি করে গিয়েছে। অরুণা আসফ আলি থেকে উষা মেহেতা, মাতঙ্গিনী হাজরা থেকে কুমুদিনী ডাকুয়া, কনকলতা বড়ুয়া থেকে তিলেশ্বরী বড়ুয়া, ভোগেশ্বরী ফুকাননী থেকে শশীবালা দাসী- এমন হাজার হাজার নারীদের কেউ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে কারাবরণ করেছেন, আবার কেউ বা শহিদ হয়েছেন। প্রধান উদ্যোক্তা দীপ্ত ঘোষ , তার মতে ”তাদের কাছে এঁরাই প্রকৃত দুর্গা, যাঁরা দেশের স্বার্থে ঔপনিবেশিক অসুরশক্তিকে পরাস্ত করতে দেশের হয়ে ত্রিশূল ধরেন।” যাঁর হাতে রূপ পাবে এই পূজা ভাবনা, তিনি অভিজিৎ ঘটক।মুখ্য উপদেষ্টা প্রিয়দর্শিনী ঘোষ বাওয়া।