দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক:আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের এক জুনিয়র মহিলা চিকিৎসকের রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। মৃতার নাম অনিন্দিতা সোরেন (২৪)। জানা গেছে, মালদহে ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে তাঁকে ভর্তি করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজে, সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এই মৃত্যুর ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে উজ্জ্বল সোরেন নামে এক জুনিয়র চিকিৎসকের বিরুদ্ধে, যিনি মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পড়ুয়া। মৃতার পরিবারের পক্ষ থেকে ইংরেজ বাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়নি।
অনিন্দিতা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এমবিবিএস-র ছাত্রী ছিলেন। তাঁর বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে। ঘনিষ্ঠ ওই বন্ধুর বাড়ি পুরুলিয়াতে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দু’জনের পরিচয় হয়। উজ্জ্বলের সঙ্গে দেখা করতে ওই ছাত্রী গত সোমবার মালদহে এসেছিলেন। এরপর তাঁরা দু’জন মালদহ শহরের একটি হোটেলে ওঠেন। ওই হোটেলে থাকার সময়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন আরজি করের ওই ডাক্তারি পড়ুয়া। তাঁকে ভর্তি করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এরপর গতকাল গভীর রাতে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রীর। পরিবারের অভিযোগ, ওষুধ জাতীয় কিছু খাইয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের মেয়েকে।
মৃত ছাত্রীর মা আলপনা টুডু বলেন, “ওরা পরস্পরকে ভালবাসত। আমার মেয়েকে জোর করে গর্ভপাত করায়। তারপর ছেলেটি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করত। পুরীতে গিয়ে ওরা মন্দিরে বিয়ে করেছিল। আমার মেয়ে রেজিস্ট্রি করতে চেয়েছিল। ছেলেটি তা চায়নি। সোমবার মেয়েকে মালদহে ডেকেছিল। মেয়েকে ফোন করলে বলত, মালদহে রয়েছি। আমার মনে হচ্ছে জোর করে ওরা ওষুধ খাইয়ে দিয়েছে। যে ছেলেটির জন্য এমন ঘটনা ঘটল, তার যেন শাস্তি হয়।” তিনি আরও বলেন, “ওই ছেলেটিই আমাকে গতকাল ফোন করেছিল। আমাকে জিজ্ঞাসা করে, আমি আসব কি না।” মালদহ মেডিক্যালের বিরুদ্ধেও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেন তিনি।
মৃত চিকিৎসক পড়ুয়ার বাবা জোসেফ সোরেন বলেন, “মেয়ে তার সম্পর্কের কথা আমাকে কখনও বলেনি। বাবা হিসেবে আমি চাই, যদি কোনও অন্যায় হয়ে থাকে, তাহলে তদন্ত করে পুলিশ ব্যবস্থা নিক।” মৃত ছাত্রীর দাদা অনুপম সোরেন বলেন, “আমি ওই ছেলেটিকে চিনতাম না। কী কারণে এমন ঘটেছে, তা তদন্ত করে দেখুক পুলিশ। যদি ওই ছেলেটি দোষী হয়, তা হলে পুলিশ ব্যবস্থা নিক।”
ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত। মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ।