West Bengal

3 hours ago

Trinamool BJP clash: নন্দীগ্রামে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তেজনা, মারধর-ভাঙচুর-লুঠপাট ঘিরে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে সরগরম মহম্মদপুর!

BJP-Trinamool clash
BJP-Trinamool clash

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: নন্দীগ্রামে ফের উত্তপ্ত রাজনীতির মঞ্চ। বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ, মারধর, দোকান ভাঙচুর ও লুঠপাটের অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের মহম্মদপুর ও ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত সংলগ্ন এলাকায়। সোমবার রাতে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার পর মঙ্গলবার  রাজনৈতিক তরজা চরমে ওঠে। দুই শিবিরই পৃথকভাবে মিছিল করে প্রতিবাদে সরব হয়। গোটা মহম্মদপুর বাজার অঞ্চল জুড়ে টান টান উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার সূত্রপাত সোমবার গভীর রাতে, মহম্মদপুর ও ভেকুটিয়া সংযোগস্থলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় আচমকা তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বচসা থেকে শুরু হয়ে হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে কিছু দোকানেও ভাঙচুর ও লুঠপাটের ঘটনা ঘটে। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, তাদের কর্মী কালু বরণ জানাকে পরিকল্পিতভাবে একা পেয়ে ঘিরে ধরে মারধর করেন বিজেপি কর্মীরা। তারা দাবি করছে, কালু বরণ একটি রাজনৈতিক মামলায় সাক্ষী ছিলেন এবং সেই কারণেই তাঁকে নিশানা করা হয়েছে। অন্যদিকে বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি সমর্থক তপন মাইতির সবজির দোকানে  হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে ও লুঠপাট করে। বিজেপি নেতাদের দাবি, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বাজারে গিয়ে তোলাবাজি করতে আসে এবং কাটমানি চায়। তপন মাইতির দোকান সেই প্রেক্ষিতে টার্গেট হয়। 

মঙ্গলবার বিকেলে বিজেপির মণ্ডল-১ ইউনিটের তরফে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয় মহম্মদপুর বাজার এলাকা থেকে। নেতৃত্বে ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মেঘনাথ পাল, মণ্ডল সভাপতি ধনঞ্জয় ঘড়া ও অন্যান্য নেতৃত্ব। ধনঞ্জয় ঘড়া বলেন, “তৃণমূলের লোকেরা বহিরাগত দুষ্কৃতীদের এনে  নিরীহ ব্যবসায়ীদের ভয় দেখাচ্ছে। তপন মাইতির দোকানে হামলা চালিয়ে কাটমানি দাবি করা হয়। এরপর ভাঙচুর ও লুঠপাট করা হয়। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। এটা সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু নয়।” বিজেপি নেতৃত্ব আরও দাবি করেছে, মহম্মদপুর বাজারে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের প্রতিও হুমকি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দোকানপাট বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে, যাতে তৃণমূল নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে পারে এবং এলাকায় দখল কায়েম রাখতে পারে। এর পাল্টা হিসাবে রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকেও একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। ব্লক তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন, “কালু বরণ জানা আমাদের সক্রিয় কর্মী। একটি রাজনৈতিক মামলায় তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন। সেই কারণেই বিজেপি তাঁকে নিশানা করেছে। পরিকল্পিতভাবে তাঁকে একা পেয়ে মারধর করা হয়েছে। এটা গণতন্ত্রে চলতে পারে না।” তৃণমূল নেতার অভিযোগ, বিজেপি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই এই হামলা চালিয়েছে।  তিনি প্রশাসনের কাছে দ্রুত দোষীদের গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছেন। 

এই দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মিছিল এবং অভিযোগে বুধবার দিনভর সরগরম ছিল মহম্মদপুর বাজার এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যেই দোকানপাট বন্ধ রাখেন। কেউ কেউ জানান, এমন রাজনৈতিক সংঘর্ষে সাধারণ মানুষের জীবিকা বিপন্ন হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ  মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় চলছে টহলদারি। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে কোনও সরকারি বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজ্যের অন্যতম রাজনৈতিক ভাবে স্পর্শকাতর এলাকা নন্দীগ্রামে ফের এই ধরনের ঘটনা শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে  সংঘাতের আঁচকে আরও উসকে দিল। এখন দেখার, প্রশাসন কত দ্রুত এই পরিস্থিতি শান্ত করে এবং আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনে।

You might also like!