দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্য সরকারের অনুমোদিত বালি খাদান থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত বালি তোলা এবং তা পাচারের অভিযোগ উঠলেও, পুলিশ শুধুমাত্র FIR দায়ের করে দায়সারা করেছে—এমনই অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এবার সেই FIR-এর ভিত্তিতেই, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED) ECIR নথিভুক্ত করে সরাসরি বালি পাচার মামলার তদন্তে নামল। ইডির মূল প্রশ্ন—এই অবৈধ বালি পাচার থেকে সংগৃহীত টাকা আদতে কার কার ঘরে পৌঁছেছে?
ED সূত্রে দাবি, বালি খাদান লিজ নিয়ে বেআইনিভাবে বেশি পরিমাণ বালি তোলা হয়েছে। আর এভাবেই বিরাট অঙ্কের টাকা নয়ছয় হয়েছে। ED এখন জানতে চাইছে, বেআইনিভাবে বালি পাচারের মুনাফা কি GD মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেডের ঘরে গেছে? এই টাকা কি কোনও প্রভাবশালীর কাছেও পৌঁছেছে? বিভিন্ন হাত ঘুরে কি কালো টাকা সাদা করা হয়েছে? সেই তল্লাশি করতে গিয়ে এবার মেদিনীপুরে বালি ব্যবসায়ীর বাড়িতে পাওয়া গেল টাকার পাহাড়। বালি ব্যবসায়ীর বাড়িতে উদ্ধার ৬৪ লক্ষ টাকা, এমনটাই খবর ইডি সূত্রে। প্রায় ১৪ ঘণ্টা ইডি তল্লাশি বালি ব্যবসায়ী সৌরভ রায়ের বাড়িতে। বাড়ির ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় রাখা ছিল নোটের বান্ডিল, খবর ইডি সূত্রে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মোবাইল ফোন ও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি। সোমবার এই কারবারে মুনাফা কতটা, তা আন্দাজ করা যায় গোপীবল্লভপুরের নয়াবসানে GD মাইনিং প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মী শেখ জহিরুল আলির এই বাড়ি দেখলেই। যিনি কিনা একসময়ে সাইকেল মিস্ত্রি ছিলেন। আজ তিনি এই অট্টালিকার মালিক।
সূত্রের খবর, একসময় সাইকেল মেরামতির কাজ করতেন জহিরুল। পরে ভিলেজ পুলিশের চাকরি পান। কিন্তু এখন সেই জহিরুলের বাড়ি থেকেই ইডি উদ্ধার করেছে ১২ লক্ষ টাকা—এমনটাই দাবি সংস্থার সূত্রে। আরও জানা গেছে, কয়েক মাস আগে বর্ধমান রেঞ্জে জাতীয় সড়কে একাধিক বালি বোঝাই ট্রাক আটক করে পুলিশ। চালকরা যখন বৈধ কাগজপত্র হিসেবে GD মাইনিংয়ের জাল নথি পেশ করে, তখনই বিষয়টি সন্দেহজনক হয়ে ওঠে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বর্ধমানের এক থানায় FIR দায়ের হয়। এর আগে স্কুল ও পুর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ইডি ও সিবিআইয়ের জালে উঠে এসেছে একের পর এক প্রভাবশালী নাম। এবার বালি পাচার কাণ্ডেও কি সেই রকম কোনও 'বড় নাম' প্রকাশ্যে আসবে? প্রশ্ন উঠছে প্রশাসন ও তদন্ত মহলে।