দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ। নির্বাচনের আগে তাঁকে দেখতে তাঁর বাসভবনে যান জয়নগরের বিজেপি প্রার্থী অশোক কাণ্ডারি। আর ভোটের ফল বেরোতেই রেজ্জাকের বাড়িতে গেলেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। অসুস্থ রেজ্জাকের পাশে বসে শওকত তাঁর রাজনৈতিক গুরুর খোঁজখবর নিলেন। ভাঙড় থেকে যে ৪২ হাজার ভোটের লিড নিয়েছেন সে কথাও জানালেন।
ক্যানিং পূর্ব বিধানসভার অন্তর্গত মিলনবাজারের কাছে বাঁকড়া গ্রামে রেজ্জাক মোল্লার পৈত্রিক ভিটে। অসুস্থ অবস্থায় গত তিন-চার বছর ধরে এই বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রেজ্জাক। ইদানীং শাসক-বিরোধী কেউই রেজ্জাক সাহেবের কোনও খোঁজ খবর নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। এই আবহে অসুস্থ রেজ্জাকের খোঁজ নিয়ে রাজনীতির ময়দানে সৌজন্যের ছবি দেখালেন শওকত। এর আগেও শওকত একবার রেজ্জাকের এই বাড়িতে এসেছিলেন। এ দিন শওকতের সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বাহারুল ইসলাম এবং ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শাহজাহান মোল্লা।
উল্লেখ্য, চার-পাঁচ বছর ধরে বার্ধক্যজনিত অসুখের পাশাপাশি কিডনির অসুখে ভুগছেন রেজ্জাক। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে না লড়ে স্বেচ্ছায় সরে আসেন। ৮১ বছরের রেজ্জাক দীর্ঘদিন বামফ্রন্ট সরকারের ভূমি সংস্কার দপ্তরের মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়ে ভাঙড় থেকে জিতে কৃষি বিপণন ও উদ্যান পালন দপ্তরের মন্ত্রী হন। রেজ্জাকের ছেলে মোস্তাক আহমেদ ভাঙড় থেকে জেলা পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০১৮ সালে। ২০২৩ সালে দল আর তাঁকে টিকিট দেয়নি।
বাম আমলে রেজ্জাক মোল্লা যখন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক ছিলেন তখন শওকত মোল্লা তাঁর ডেপুটি হিসেবে কাজ করতেন। আবার শওকত তৃণমূলে যোগদান করার পরই রেজ্জাক মোল্লা তৃণমূলে নাম লেখান। এবং ভাঙড় থেকে জিতে মন্ত্রীও হন। শওকত জানিয়েছেন, তাঁর প্রতিটি রাজনৈতিক পদক্ষেপে তিনি রেজ্জাক মোল্লার থেকে পরামর্শ এবং সহযোগিতা পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কাকা-ভাইপোর সম্পর্ক।
তাই লোকসভা ভোটে ভালো ফল করার পরেই তিনি এসেছেন কাকার খোঁজ নিতে। রেজ্জাকও এ দিন শওকতকে দেখে খুব খুশি হন। তিনি তাঁকে আশীর্বাদ করেন। পরে রেজ্জাক মোল্লা বলেন, ‘আমাকে দেখতে এর আগে বিজেপির প্রার্থী এসেছিলেন। আমি তখনই বলেছিলাম ভাঙড়ে তৃণমূলই ভালো করবে। সেটাই হয়েছে।’ শওকতের নেতৃত্বে ভাঙ্গরে তৃণমূল আইএসএফের থেকে ৪২ হাজার এবং বিজেপির থেকে ৮১ হাজার বেশি ভোট পেয়েছে।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে তৃণমূল শওকতকে দায়িত্ব দিয়েছিল সাতগাছিয়া, গোসাবার পাশাপাশি ভাঙড় বিধানসভার। ভাঙড়ই ছিল সবচেয়ে কঠিন জায়গা। গত বিধানসভায় ভাঙড়ে জিতেছিল আইএসএফ। এ বার আইএসএফের ২৬ হাজার লিড ছাপিয়ে তৃণমূল ৪২ হাজার ভোটের লিড নিয়েছে। স্বভাবতই ভীষণ খুশি শওকত।