আসানসোল, ২৫ সেপ্টেম্বর : দুর্গাপুজোর আগেই পুজো শেষ! শুনে অবাক হচ্ছেন তো। হ্যাঁ হওয়ারই কথা। কিন্তু এটা একবারে সত্যি। পশ্চিম বর্ধমান জেলা আসানসোলের ইস্পাত নগরী বার্নপুরের কালাঝরিয়ার ধেনুয়া কালীকৃষ্ণ যোগাশ্রমে হয় একদিনের দুর্গাপুজো। তাও আবার মহালয়ায়। একদিনেই সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমীর পুজো হয়। এবারের এই পুজো নয় নয় করে ৪৯ বছর পার করে ৫০ বছরে পড়ল। একবারে অন্য রকমের এই পুজো দেখতে দুর দুরান্ত থেকে ভক্তরা ভিড় জমান বার্ণপুর গ্রামে।
এবারও তার ব্যতিক্রম হল না । রবিবার ভোর থেকে শুরু হয়ে দুর্গাপুজো। তার আগে একই মন্দিরে রাতে অমাবস্যায় কালীপুজো হয়। তারপর আগমনি দুর্গার আবাহন। একদিনেই সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী। একদিনের এই অভিনব দুর্গাপুজো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ উপস্থিত হন ধেনুয়া গ্রামে। পুরোহিত আশিস ঠাকুরের দাবি, পুজোয় চার রকমের ভোগ করতে হয় একদিনেই। দশমীর পুজো শেষে ঘট বিসর্জন হয়ে যায়। তবে মাতৃপ্রতিমা রেখে দেওয়া হয়।
জানা যায়, আজ থেকে ৫০ বছর আগে কালীকৃষ্ণ যোগাশ্রমের তেজানন্দ ব্রহ্মচারী একদিনের দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন। তিনি মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন। তারপর এই পুজো শুরু করেন তিনি। এখানে মায়ের সঙ্গে তাঁর চার ছেলেমেয়ে গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী ও সরস্বতী থাকে না। মা দুর্গার সঙ্গে থাকে তাঁর দুই সখী জয়া ও বিজয়া। মহিষাসুরও মায়ের সঙ্গে এখানে নেই। রয়েছে তাঁর বাহন সিংহ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু হয় এই অভিনব দুর্গা পুজো। তবে প্রথম বছরের পর তিন বছর বন্ধ ছিল পুজো। ১৯৭৮ সালে আসাম থেকে আসা তেজানন্দ ব্রহ্মচারী এই দুর্গাপুজো পুনরায় শুরু করেন। ২০০৩ সালে তাঁর মৃত্যুর পর আশ্রমে গৌরী কেদারনাথ মন্দির কমিটির তত্ত্বাবধানে পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে। বর্তমানে এই পুজো করেন আশীষ কুমার ঠাকুর। এদিন তিনি বলেন, আমি এই পুজোর পুরোহিত হিসাবে ধন্য। আর কোথাও এমন পুজো হয় বলে আমার জানা নেই। এখানে মায়ের মূর্তি আলাদা হলেও, পুজোর আচার একই। মহালয়ার দিন পুজো হলেও, বিসর্জন হবে একাদশীর দিন।