জলপাইগুড়ি, ৬ অক্টোবর: জলপাইগুড়ি জেলার মালবাজারের মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের সময় হঠাৎ হড়পা বানে ভেসে প্রাণ হারালেন ৮ জন। বুধবার দশমীর সন্ধ্যায় মাল নদীতে আচমকা হড়পা বানে ভেসে যান বহু মানুষ। এখনও বেশ কয়েক জন নিখোঁজ রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জলপাইগুড়ি জেলার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা জানিয়েছেন, হড়পা বানে এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলছে উদ্ধারকাজ। মৃতদের মধ্যে এক নাবালিকা এবং এক শিশুও রয়েছে। রয়েছেন ৭২ বছরের এক বৃদ্ধ। এই দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রশাসনের তরফে মৃত ব্যক্তিদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে রয়েছে তপন অধিকারী (৭২), ঊর্মি সাহা (১৩), রুমুর সাহা (৪২)। অংশ পণ্ডিত (৮), বিভা দেবী (২৮), শুভাশিস রাহা (৬৩), স্বর্ণদেবী অধিকারী (২০) এবং সুস্মিতা পোদ্দার (২২)।
প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নতুন করে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই মালবাজারে ভারী বৃষ্টি হয়, বৃষ্টি একটু থামতেই নতুন করে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় ১৬ জনকে মালবাজারের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আট জন মহিলা। বিপর্যয় প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেছেন, ‘‘রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ হড়পা বান নেমেছিল। তার জেরে কয়েক জন ভেসে যান। কয়েক জন নদীর মাঝে একটা চরে আশ্রয় নেন। যাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁদের সকলকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’
বুধবার রাত তখন সাড়ে ৮টা। মালবাজার এলাকায় মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের জন্য নদীর ধারে উপস্থিত হয়েছিলেন বহু মানুষ। বিসর্জনের জন্য প্রতিমা নিয়ে আসা হয়েছিল ট্রাকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ১০টিরও বেশি ট্রাকে চড়ে মানুষ এসেছিলেন বিভিন্ন প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায়। প্রতিমা নিরঞ্জন যখন পুরোদমে চলছে তখন আচমকা ধেয়ে আসে হড়পা বান। সে দিকে খেয়াল ছিল না কারও। তার জেরে নদীতে যাঁরা নেমেছিলেন তাঁদের অনেকেই স্রোতের টানে ভেসে যান। ট্রাকও স্রোতের টানে ভেসে যায়। মাল নদীর মাঝে একটি চর রয়েছে। সেই চরে উঠে প্রাণ বাঁচান অনেকে। এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘‘জলপাইগুড়িতে প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তাতে আমি ক্ষুব্ধ। এই দুর্ঘটনায় যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করছি।’’