Life Style News

8 months ago

Mount Everest: কেন 'গোরস্থান' বলা হয় মাউন্ট এভারেস্টকে? জানলে অবাক হবেন আপনি

Why is Mount Everest called 'graveyard'? You will be surprised to know
Why is Mount Everest called 'graveyard'? You will be surprised to know

 

 বিশ্বের সর্বোচ্চ কবরস্থান, মাউন্ড এভারেস্ট

মাউন্ট এভারেস্ট পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। নেপালে এর পরিচিতি সগরমাথা নামে এবং তিব্বতে এর নাম চোমোলাংমা। এই শৃঙ্গটি হিমালয়ের মহালঙ্গুর হিমাল পর্বতমালায় অবস্থিত। ৮৮৪৮ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ এভারেস্ট আমাদের প্রতিবেশী দেশ নেপালে অবস্থিত। এভারেস্টে পৌঁছোনো প্রত্যেক পর্বতারোহীর স্বপ্ন। অত্যাধিক কম তাপমাত্রা এবং কঠিন পরিস্থিতির কারণে এই শৃঙ্গে ওঠা ছিল দুঃসাধ্য। আজ থেকে প্রায় ৭০ বছর আগে ১৯৫৩ সালে নিউজিল্যান্ডের এডমন্ড হিলারি এবং নেপালের শেরপা তেনজিং নোরগে প্রথমবারের মতো এভারেস্টে পৌঁছে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন।

এরপর থেকেই এভারেস্ট জয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

একের পর এক পর্বতারোহী এই শিখরে পৌঁছতে থাকে। ১৯৭৮ সালের ৮ মে অস্ট্রিয়ার পিটার হেবলার এবং ইটালির রেইনহোল্ড মেসনার প্রথম অক্সিজেন ছাড়া এভারেস্ট এর চূড়ায় সফলভাবে অরোহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৬ মে প্রথম মহিলা হিসেবে এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণ করার কৃতিত্ব লাভ করেন জাপানের জুনকো তাবেই। পর্বতারোহীদের স্বপ্নের এই স্থানেরও কিন্তু বদনামে শেষ নেই। বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের আরেক নাম 'বিশ্বের সর্বোচ্চ গোরস্থান'। শুনতে অবাক লাগলেও কথাটা সত্যি। কথাটা শুনলে অদ্ভুত লাগবে। কিন্তু কেন এমন নাম? নামের পিছনে লুকিয়ে আছে কোন রহস্য?

গোরস্থানে সাবধান!

দুর্গম হলেও মাউন্ট এভারেস্ট এতটাই জনপ্রিয় যে প্রতি বছর এখানে গড়ে প্রায় ৮০০ পর্বতারোহী পর্বতারোহণ করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় তাঁদের সবাই আর জীবিত ফিরে আসতে পারেন না। অনেকে নিখোঁজ হন, কেউ আবার সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। মৃতদেহগুলি সেখানেই বরফের মধ্যে চাপা পড়ে যায়। পরিসংখ্যান অনুসারে, ১৯২০ সাল থেকে শুরু করে ৩৩০ জনেরও বেশি পর্বতারোহী মাউন্ট এভারেস্টে মারা গেছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গই ক্রমশ হয়ে উঠেছে বিশ্বের সর্বোচ্চ কবরস্থান।

যাবার আগে অনুমতি

বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত চূড়ায় আরোহণ করার জন্য অনুমতি নিতে হয়। মাউন্ট এভারেস্টে যাওয়ার পথটি নেপালের মধ্য দিয়ে যায়। নেপাল সরকার ভারতীয় নাগরিকদের ১৫০০ নেপালি টাকায় বিনিময়ে প্রবেশের অনুমতি দেয়। এভারেস্টে উঠতে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়।

কেন এভারেস্টে এত মৃত্যু হয়?

মাউন্ট এভারেস্টে কেউ প্রাণ হারালে তাঁর দেহ ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। মৃতদেহ এখানেই বরফের মধ্যে চাপা পড়ে যায়। অবশ্য শুধু যে অতিরিক্ত ঠান্ডা, উচ্চ রক্তচাপ, কিংবা অক্সিজেনের অভাবেই মৃত্যু ঘটে তা নয়, মৃত্যুর অনেক কারণ থাকে। এখানে উঠতে অনেক সময়ই মানুষ প্রতারণার ফাঁদে পড়েন। অনেক সময় সস্তা পারমিটের লোভে এবং সঠিক ফিটনেস টেস্টের অভাব থাকা সত্ত্বেও অভিযাত্রী সংস্থাগুলিকে অর্থ প্রদান করে, কোনও অভিজ্ঞতা ছাড়াই অনেকে এভারেস্টে উঠতে যান। যার ফল হয় মারাত্মক।

মানুষের শরীর অতিরিক্ত উচ্চতা সহ্য করতে পারে না

মানুষের শরীর অতিরিক্ত উচ্চ স্থানে যাওয়ার জন্য স্বাভাবিকভাবে তৈরি থাকে না। এর জন্য প্রয়োজন নির্দিষ্ট অনুশীলন। মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা এতটাই বেশি যে তা সহ্য করতে পারা সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। সাধারণ লোকেদের উঁচু স্থানে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব এবং সংজ্ঞাহীনতার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এত উচ্চতায়, অক্সিজেন সিলিন্ডারে থাকা গ্যাসের প্রতিটি অনু মূল্যবান। ফলে অক্সিজেন শেষ হওয়ার আতঙ্কেও মনে থেকে যায়। মানসিক চাপেও শরীর অসুস্থ হয়।

মস্তিষ্কে ফোলাভাবের সমস্যা

এভারেস্ট আরোহনের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলি হল মানসিক। সেরিব্রাল এডিমা মস্তিষ্কে ফোলাভাব সৃষ্টি করে। যে কারণে অনেক সময় একজন মানুষ তার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে পারেন। এখনও পর্যন্ত ৪০০০-এরও বেশি মানুষ মাউন্ট এভারেস্ট আরোহণ করেছেন। কিন্তু মাউন্ট এভারেস্টে এমন কত মৃতদেহ যে সেখানে চাপা পড়ে গেছে এবং যাবে তার ইয়ত্তা নেই।

You might also like!