দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ সন্দেশখালিকাণ্ডের তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। রাজ্য পুলিশ ও সিবিআইকে নিয়ে সিট গঠনের নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ। রাজ্য পুলিশের তদন্তের ওপরও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ আপাতত স্থগিত থাকবে। কোনও এফআইআরের উপরই তদন্ত করতে পারবে না রাজ্য পুলিশও। দু'পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে। ৬ মার্চ পরবর্তী শুনানি।
ইডি প্রথম থেকেই চেয়েছিল সন্দেশখালি কাণ্ডের তদন্ত করুক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এই মর্মে তারা কলকাতা হাই কোর্টে আর্জিও জানিয়েছিল। কিন্তু হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত তাঁর নির্দেশে জানিয়ে দেন, শুধু সিবিআই নয়, এই মামলার তদন্ত করতে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) তৈরি করা হবে। সেই সিটের মাথায় থাকবেন সিবিআই এবং রাজ্য দু’তরফেরই অফিসার এসপি পদ মর্যাদার আধিকারিক। এছাড়া দু’পক্ষেরই সমান সংখ্যক সদস্য সিটে থাকবে বলে জানিয়েছিল আদালত। বিচারপতি এ-ও জানিয়েছিলেন আদালতের নজরদারিতে এই তদন্ত হবে। কিন্তু বিচারপতির সেই নির্দেশ মনঃপুত হয়নি কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডির।
সম্প্রতি তারা এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের দ্বারস্থ হয় এবং জরুরি ভিত্তিতে ওই মামলার শুনানির আর্জি জানায়। বুধবার ইডির সেই আবেদনেরই শুনানি হয় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে।
ইডির পাশাপাশি সন্দেশখালির তদন্ত নিয়ে প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্যও। তাদের দাবি ছিল ইডির আর্জির ঠিক বীপরীত। আদালতকে তারা বলেছিল, সন্দেশখালির ঘটনার তদন্ত রাজ্যের হাতেই থাকুক। অর্থাৎ পুলিশকেই এর তদন্তভার দেওয়া হোক। তারাই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। বুধবার এই দু’টি মামলারই এক সঙ্গে শুনানি হওয়ার কথা ছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। আর তা হয়ও।
রেশন ‘দুর্নীতি’র তদন্তে এক মাস আগে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে তাঁর গ্রাম সরবেরিয়ায় আক্রান্ত হন ইডির আধিকারিকেরা। শাহজাহানের বাড়ির সামনেই প্রায় হাজার খানেক গ্রামবাসী ঘিরে ধরেন ইডির দলটিকে। ইডির সঙ্গে ছিল সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী। সে সবের পরোয়া না করেই ইট, পাথর, বাঁশের লাঠি নিয়ে গ্রামবাসীরা চড়াও হন তাঁদের উপর। ঘটনাস্থল থেকে কোনওক্রমে প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে আসে ইডির দলটি। তত ক্ষণে ইডির তিন আধিকারিক গুরুতর জখম হয়েছেন। কলকাতায় ফিরে হাসপাতালেও ভর্তি করাতে হয় তাঁদের।
এই ঘটনার নিন্দায় সরব হন রাজ্যের বিরোধী দল থেকে শুরু করে রাজ্য সি ভি আনন্দ বোস। কলকাতায় এসে বিশেষ বৈঠক করেন ইডির শীর্ষ কর্তাও। গত ৫ জানুয়ারি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই ইডির তরফে এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা দায়ের করা হয় কলকাতা হাই কোর্টে।