দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ধুলোমুক্ত শহরের তকমা পেতে চলেছে শহর কলকাতা। এমন এক লক্ষ্য নিয়ে এবার শহরকে ‘রাতস্নান’ করানোর জন্য উদগ্রীব পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষ পরিকল্পনা নিয়েছে গাছের পাতায়, সেতু বা অন্য নির্মাণের গায়ে সারা দিন যে ধুলো জমে তা সারারাত ধরে জল ছিটিয়ে পরিষ্কার করার। এই কার্যক্রম দেখা যায় আমেরিকার অনেক শহর ছাড়াও তাইওয়ান, হংকংয়ে।
সেই আদলেই ‘নাইট সার্ভিস’ চালু হচ্ছে ধুলো সাফাইয়ের। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন রাত সাড়ে দশটার পরে এই সার্ভিস চালু হবে। চলবে ভোর চারটে পর্যন্ত। পুরসভার নিকাশি বিভাগের এক আধিকারিক জানান, বিশেষ এক ধরনের গাড়িতে এই জল ছেটানো হবে। গাড়ির উপরে একটি রিভলভিং চেয়ার থাকবে। সেই চেয়ারে বসে ৩৮০ ডিগ্রি ঘুরে রাস্তার পাশে থাকা গাছ, সেতু, বিল্ডিংয়ে জল ছেটানো যাবে। এই গাড়িতে একটি জলের ট্যাঙ্কও থাকবে।
সেখান থেকে জল দিয়ে ধোয়া হবে শহরের গাছপালা, সেতু, বিল্ডিং। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কাজে পরিত্যক্ত জলকে জীবাণু মুক্ত করে ব্যবহার করা পরিকল্পনা রয়েছে। শহরের বিভিন্ন খাল এবং নিকাশির পাম্পিং স্টেশনের পরিত্যক্ত জলকে পরিশোধন এবং জীবাণু মুক্ত করে ব্যবহার করা হবে। এজন্য জলের নমুনা নিয়ে খড়গপুর আইআইটিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল।
ওই প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনাও করেছিলেন পুরসভার নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা। তাঁরা সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পরেই শহরকে ধুলো মুক্ত করার কাজে এই জল ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভার ওয়ার্কশপে পুরোনো পড়ে থাকা দুটো গাড়ির খোলনলচে বদলে জল ছেটানোর কাজের উপযোগী করা হয়েছে।
ভবিষ্যতে এই ধরনের গাড়ির সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে পুরসভার নিকাশি বিভাগের এক আধিকারিক জানান। শহরকে ধুলো মুক্ত করার জন্য এর আগেও দু’টি উদ্যোগ ছিল কলকাতা পুরসভার। ধুলো দমনের জন্য প্রতিদিন সকালে শহরের রাস্তায় জল ছেটানো এবং চেতলা এবং নিউ আলিপুরেরর একাংশে অলিগলির ভিতরে জল দিয়ে গাছ ধুইয়ে দেওয়া।
ধুলোর দূষণের জন্য শহরে শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালা সহ বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা একাধিকবার জানিয়েছেন। বিশেষ করে শীত থেকে বর্ষা পর্যন্ত এই ধুলোজনিত সমস্যা বেড়ে যায়। দেশে বায়ু দূষণের নিরিখে দিল্লির পরেই কলকাতার স্থান বলে সম্প্রতি একটি রিপোর্টও প্রকাশিত হয়েছিল। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, কলকাতাকে দূষণ মুক্ত করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেবে পুরসভা।
আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সেই ঘোষণার পরেই পরিবেশ দূষণ রুখতে একাধিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়। তারই একটি হলো শহরের রাত স্নান। নিকাশি বিভাগের মেয়র পারিষদ তারক সিং বলেন,‘শহরকে ধুলোর দূষণ থেকে মুক্ত করতে রাতে জল দিয়ে ধোয়ানোর কথা আমিও শুনেছি।’