দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ গত ৫ জানুয়ারি ইডির উপর হামলার ঘটনায় নিজের ভূমিকার কথা মেনে নিয়েছেন সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। স্বীকার করেছেন যে, ইডির বিরুদ্ধে জনতাকে লেলিয়ে দেওয়ার পিছনে তাঁর ইন্ধন ছিল। বৃহস্পতিবার পুলিশ সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছিল। তবে তিনি সিআইডি-এর সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন বলে সূত্রের খবর। শাহজাহান তাঁদের সামনে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বলেই সূত্র মারফৎ জানা গেছে। এমনকী এক কথা বারবার বলবেন না বলেও জানিয়েছেন শাহজাহান।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে সন্দেশখালির ‘ত্রাস’ গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালত দশ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। আর এই ঘটনার তদন্তভার গেছে সিআইডির উপর। সূত্রের খবর, কার নির্দেশে ইডি, সিআরপিএফ-এর উপর হামলা হয়েছিল সন্দেশখালিতে, কেন এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছিল, এই সম্পর্কিত কোনও তথ্য শাহজাহান দিচ্ছেন না। বরং প্রশ্ন শুনে হেঁয়ালি করছেন, মাঝে মাঝে চুপ করে বসে থাকছেন। কোনও সময় আবার তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ''এক কথা বারবার বলব না।''
বৃহস্পতিবারই সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূল ভবন থেকে শাহজাহানকে সাসপেন্ড করার কথা ঘোষণা করা হয়। সন্দেশখালির তৃণমূল নেতাকে ছ'বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। সন্দেশখালি-১ নম্বর ব্লকের সভাপতির পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগণার জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ কর্মাধ্যক্ষের পদেও ছিলেন শাহজাহান। দলের সমস্ত পদ থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকেও শাহজাহানকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। যদিও বিরোধীদের দাবি, এগুলি 'লোক দেখানো' সিদ্ধান্ত।
বিজেপি তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, গ্রেফতারির পর রাজকীয় কায়দায় আদালতে ঢুকতে দেখা যায় শাহজাহানকে। তৃণমূল নেতার শারীরিক ভঙ্গি, পোশাক দেখলে মনে হবে না তিনি গ্রেফতার হয়েছেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "পুলিশ মাথা নীচু করে হাঁটছে, আর শাহজাহান তাঁদের মাঝখান দিয়ে গটগট করে মাথা উঁচু করে এজলাসে ঢুকলেন! যেন অলিম্পিকে পদক জিতে এসেছেন।" বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, "পুলিশ যে শাহজাহানের কথাতেই চলে, তা এই দিন ওঁর আদালতে ঢোকা বা বেরনোর ছবি থেকেই স্পষ্ট। পুলিশই এতদিন শেল্টার দিয়ে রেখেছিল।"
শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হওয়ার পরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ তাঁর আইনজীবী। নিম্ন আদালতের পেন্ডিং জামিনের আবেদনগুলি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করতে চায় শাহজাহান, এমনটাই বলেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি তাঁকে স্পষ্ট জানান, শাহজাহানের প্রতি তাঁর কোনও সমবেদনা নেই। তিনি আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ''আগামী ১০ বছর আমরা আপনাকে ব্যস্ত রাখব। আপনি ভালো করে একটি লিগাল টিম তৈরি করুন। আগামী ১০ বছর আপনাকে অন্য কাজ করতে হবে না। এই মামলা চালাতেই কেটে যাবে।''