কলকাতা, ২৫ সেপ্টেম্বর : ফের নিম্নচাপের ভ্রুকুটি। আবারও খানাকুল বাসী সিঁদুর মেঘ দেখতে শুরু করেছেন। কখন কি হয় এই অজানা আতঙ্ক তাদের এই মুহূর্তে তাড়া করছে। খানাকুল ব্লকের কেদারপুরে মুন্ডেশ্বরী নদীর বাঁধ ভেঙেছে। আশপাশের এলাকায় তা দুর্বল হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই মেরামতির অভাব রয়েছে। তদারকিও খামতি অস্বীকার করা যায় না। তবে সেচ দফতরের তরফে এ নিয়ে কোনও হেলদোল নেই। গত রবিবার এ রাজ্যের মুখ্যসচিব ডঃ মনোজ পন্থ সদলবলে ঘুরে গিয়েছেন খানাকুল। যদিও জল নামলে পরে তবেই সেচ দফতরের বৈঠক হবে একথা জানিয়েছিলেন তিনি। এদিকে, কেদারপুর সহ আশপাশের গ্রামের মানুষ বলেছেন, জলাধার জল ছাড়লেই ফের ঢুকবে। বৃষ্টি একটানা হয় নি। তবে এ যাত্রায় খানিকটা বাঁচোয়া।
১৯৭৮ সালের বন্যা'কেও হার মানিয়েছে ২০২৪ - এই অভিমত তাদের নিজস্ব। পাকা বাড়ির ছাদের মাথায় আপাতত ঠাঁই নিয়েছেন। অন্যদিকে, বন্যা কবলিত এলাকায় মানুষের মুখে মুখে ফিরছে সেদিনের ঘটনা। গত বুধবার অর্থাৎ ১৮ তারিখের বিকেল থেকে জল ঢুকতে শুরু করে। পরদিন অর্থাৎ ১৯ তারিখ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত জল বাড়ছে যত আতঙ্ক ও পিছু ছাড়ে না - বলছিলেন ক্যামেরা হাতে নিয়ে আনন্দ কুন্ডু।
রামমোহন রায় মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র দাসের অভিজ্ঞতা - বাড়িতে জল ঢুকেছে। একতলার ঘরে চৌকির ওপরে ডাঁই করে বই রাখা ছিল। জল নামতেই দেখি কাদার আস্তরণ। কাদামাখা সমস্ত কিছু রোদে দেওয়া হয়েছে। কয়েকদিনের রোদেও তা শুকিয়ে যায় নি। এই ক্ষয়ক্ষতির কোনও পূরণ হবে না। মজার ব্যাপার হল, নদীর জল ঢুকে গিয়ে পুকুর ভরিয়ে দিয়েছে। এর ফলে, তা উপচে গেছে। সেই জলে বসু পরিবারের পুকুরের মাছ সব উধাও। রুই - কাতলা - মৃগেল মাছ কেজি প্রতি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে রাতভর। কারও পৌষমাস তো আবার কারো সর্বনাশ - এই পরিস্থিতিতে সস্তা দরে মাছ বিক্রি হলেও ছিল না ক্রেতা। বন্যার ফলে আগাম ঘর সামলাতে ব্যস্ত নাগরিকদের মাছ কেনা দূর অস্ত। হাঁটু জল থেকে কোমর সমান জল বেড়েছে লাফিয়ে। মুক্তির আনন্দেই তো মাছের ছুটোছুটিও তখন রাস্তার মধ্যেই। হুগলি জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের এক্স হ্যান্ডেলে ত্রাণ বিতরণের ছবি রয়েছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সেচ দফতরের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে অনুরোধ করা হয়েছে। যদিও তাদের মুখে এখন কুলুপ আঁটা রয়েছে। উর্ব্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া বাঁধ ভাঙার বিষয়ে কোনও মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে হবে ।