দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও তমলুকে বিজেপির প্রার্থী অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়।আর তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সন্দেশখালি ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে বুধবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এমন মন্তব্য করেন যা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নির্বাচন কমিশনের কাছে যেতে পারে। আবার বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তমলুক এবং কাঁথিতে নির্বাচনী জনসভা আছে। সেখান থেকে এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জবাব দিতে পারেন।
সন্দেশখালি কাণ্ডে পর পর দুটি স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই নাম জড়িয়েছে বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের।তবে পর্ব–১ ভিডিয়োতে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়ালকে বলতে শোনা গিয়েছে, ২০০০ টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ করেছেন রেখা। আর তারপরই স্থানীয় এক ব্যক্তি গঙ্গাধর কয়াল এবং রেখার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রেখা পাত্র। আর এখনই গঙ্গাধর কয়ালের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে নিষেধ করেছে আদালত। তবে পিয়ালি দাসের সাতদিনের জেল হেফাজত হয়েছে বসিরহাট আদালতের নির্দেশে।
বিজেপির এই কীর্তিকলাপ ফাঁস হয়ে যেতেই বেলাগাম আক্রমণ শুরু করেছেন বিজেপি নেতারা। তার থেকে বাদ যাননি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও। হলদিয়ার চৈতন্যপুরে সভা করতেই গিয়ে রেখা পাত্রের কথা টেনে এনে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, ‘রেখা পাত্রকে কেনা হয়েছিল ২০০০ টাকায়! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুমি কত টাকায় বিক্রি হও? তোমার হাতে ৮ লাখ টাকা গুঁজে দিলে একটা চাকরি দাও। তোমার হাতে কেউ ১০ লাখ টাকা দেয় আর রেশন হাওয়া করে দেয় অন্য দেশে। ভারতেই থাকে না সেই রেশন। তোমার রেট ১০ লাখ টাকা কেন? তুমি কেয়া শেঠকে দিয়ে মুখে মেকআপ করো বলে? রেখা পাত্র গরিব মানুষ। লোকের বাড়িতে কাজ করে। আমাদের প্রার্থী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সুন্দরী নন। সেজন্য তাকে ২০০০ টাকায় কেনা যায়? একজন মহিলা হয়ে অন্য এক মহিলা সম্পর্কে কী করে ওই উক্তি করতে পারেন।’
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে এই কুকথা বলে বিতর্ক তৈরি করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে জবাব দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। তৃণমূল কংগ্রেসের সহ–সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার পাল্টা বলেন, ‘অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের উচিত নিজেকে একবার আয়নার সামনে দাঁড় করানো। তিনি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির চেয়ারটা কলঙ্কিত করেছেন। বিচারপতির চেয়ারে বসে পয়সা নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারির কাছ থেকে। সেই মতো রায়ও দিয়েছেন। আজ এটা প্রমাণিত। তিনি নিজেই বলেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি থাকাকালীন বিজেপির সঙ্গে নেগোশিয়েশন করেছিলেন। কী সেই নেগোশিয়েশন? কীভাবে নিজের চেয়ারটা বিক্রি করেছিলেন বিজেপির কাছে তা জানা প্রয়োজন। ভারতের আইনের ইতিহাসে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে ধরা হবে নোংরা, দুর্নীতিপরায়ণ এক চরিত্র হিসেবে।’