দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃবুধবার তৃণমূলের দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সরব হয়েছিল বিজেপি। তাদের অভিযোগ ছিল, বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম তাঁর মনোনয়নের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ‘নো ডিউজ় সার্টিফিকেট’ জমা দেননি। আর দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায় কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন পদে থাকা সত্ত্বেও লোকসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। যা ‘অফিস অফ প্রফিট’-এর আওতাধীন। দুই প্রার্থীর প্রার্থিপদ বাতিলের দাবির মধ্যে হাজি নুরুলের বিষয়টি নজরে এসেছে এ বারের লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়া বিধায়কদেরও।
আগামী ১ জুন সপ্তম দফায় ভোট রয়েছে কলকাতা দক্ষিণ এবং বসিরহাট দুই কেন্দ্রে। আর এই দুই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়নে গলদ রয়েছে অভিযোগে বুধবার শোরগোল ফেলে দেয় বিজেপি।
বুধবার দুপুরে এ ব্যাপারে সাংবাদিক বৈঠক থেকে বিজেপির অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী মালা রায় এবং বসিরহাটের প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলামের মনোনয়ন নিয়ম মেনে হয়নি। তাঁদের মনোনয়নে গুরুতর গলদ আছে। তাই তাঁদের দুজনের মনোনয়ন বাতিলের জন্য কমিশনে আবেদন করা হয়েছে।
এই দুই তৃণমূল প্রার্থীর মনোনয়ন নিয়ে ঠিক কী অভিযোগ? বিজেপির বক্তব্য, বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুল ইসলাম পঞ্চদশ লোকসভার সদস্য ছিলেন। সেই পঞ্চদশ লোকসভা শেষ হয়েছে ২০১৪ সালের ১৮ মে। আর তিনি এবারে মনোনয়ন দাখিল করেছেন ৭ মে। হলফনামা অনুযায়ী, শেষ ১০ বছরে যদি কোনও কারণে সরকারি পরিষেবা নেওয়া বা সরকারের থেকে নেওয়া কোনও বিধিবদ্ধ বিল বাকি থাকে তা মেটাতে হয়। এতএব সেই প্রার্থীর সরকারের কাছে যে কোনও বকেয়া নেই তা নির্বাচনী হলফনামায় জানাতে হয়।
হাজি নুরুলের বিরুদ্ধে বিজেপির অভিযোগ, ১৮ মে, ২০১৪ থেকে ৭ মে ২০২৪ তাঁর ১০ বছর পূর্ণ হয়নি। তার আগেই তিনি মনোনয়ন পেশ করেছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে তাঁর নো ডিউজ সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তিনি দেননি।
মালা রায়কে নিয়ে বিজেপির বক্তব্য, তিনি কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন রয়েছেন। যে বিধিবদ্ধ আইনগুলি রয়েছে তাতে তা 'অফিস অফ প্রফিট।' কিন্তু বাংলায় যে ৩০-৩১ টি সংস্থার তালিকা রয়েছে যে কোন সংস্থা 'অফিস অফ প্রফিট'-এর তালিকায় পড়বে, তার মধ্যে কলকাতা পুরসভার নাম নেই। তাই পুরসভার চেয়ারপার্সন থাকাকালীন, সেখান থেকে পদত্যাগ না করে মালা রায় মনোনয়ন জমা দিলে তা নির্বাচনী আইন ভাঙার মধ্যে পড়ে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, সেকশন ৩৬ অফ রিপ্রেসেন্টেশন অফ পিপলস অ্যাক্ট অনুযায়ী, যদি কোনও প্রার্থী সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছাবসর নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হন, তাঁকে 'নো ডিউজ' সার্টিফিকেট জমা করতে হয়। বীরভূমে বিজেপি প্রথমে যাকে প্রার্থী করেছিল সেই প্রাক্তন আইপিএস অফিসার দেবাশিস ধর 'নো ডিউজ সার্টিফিকেট' দেননি। তাঁর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েও লাভ পাননি তিনি।
তবে এক্ষেত্রে বিজেপির আনা অভিযোগ উড়িয়ে কমিশন জানিয়েছে তৃণমূল প্রার্থী মালা রায় ও হাজি নুরুল ইসলামের মনোনয়নে কোনও ত্রুটি নেই।