কলকাতা, ২৬ আগস্ট: পুজোর আর মাসখানেক বাকি। উদ্যোক্তাদের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। কিন্তু কুমোরটুলির শিল্পীদের অনেকেরই কপালে চিন্তার ভাঁজ। ভিলেন যেন আবহাওয়া। রোদ-বৃষ্টির খেলার মাঝেই চলছে প্রতিমাশিল্পীদের ব্যস্ততা।
কয়েক বছর আগে দেশপ্রিয় পার্কে ‘বিশ্বের সর্ববৃহৎ দুর্গা’ তৈরি করে হইচই বাঁধিয়ে দিয়েছিলেন ভারতের অন্যতম সেরা মৃৎশিল্পী মিন্টু পাল। এই প্রতিবেদককে জানালেন, “এবার ৩৫টি প্রতিমা তৈরির বরাত পেয়েছেন। এর মধ্যে ১৪টা বাইরের। গত বছর প্রতিমার গড় উচ্চতা ছিল ১০’-১১’ এর মত। এবার অতিমারী-অন্তে উচ্চতা হচ্ছে ১৮’-১৯’ এর মত। ইউনিসেফ-এর স্বীকৃতি পাওয়ায় বাংলার পুজোয় এবার অনেক বেশি মাত্রা এসেছে।“
কুমোরটুলির প্রতিমাশিল্পীর সংখ্যা প্রায় আড়াইশ। সব মিলিয়ে কারিগর প্রায় সাড়ে চারশ। কুমোরটুলির শিল্পীদের একাংশ জানান, “মাঝে মাঝে বৃষ্টি আমাদের রীতিমত চিন্তায় রেখেছে। আমরা তো এই টানা বৃষ্টিতে কাজই করতে পারছি না। মাটি শুকোচ্ছে না। এমনকি খড়ও ভেজা। এই ভেজা খড়ে মাটি চাপাব কী করে! চাতক পাখি মেঘের জন্য আকুল হয়, আর আমরা একটু রোদের জন্য ব্যাকুল।’’ শুক্রবার অবশ্য ঝকঝকে আবহাওয়ায় খুশি কুমোরটুলির প্রতিমাশিল্পীরা।
কলকাতায় বড় করে বেশ কিছু দুর্গাপুজো হয়। তাক লেগে যায় সেগুলি দেখে। তাকে ঘিরে আয়োজন শুরু হয়েছে। কলকাতার বিভিন্ন এলাকার পুজোর আয়োজকরা ব্যবস্থা করেছিলেন খুঁটি পুজোর।উদ্যোক্তারা মাথা ঘামাতে শুরু করেছেন থিম থেকে আলো, মণ্ডপে ঢোকার লাইন থেকে বিশেষ পাস, আয়োজনের এতটুকু খামতি থাকে না।
কুমোরটুলির শিল্পীদের কয়েক জনের প্রশ্ন, ফের নাকি দুর্যোগের সতর্কতা জারি হয়েছে? তা হলে কাজ শেষ হবে কী করে? এক শিল্পী বলেন, ‘‘আমাদের সবার গোলার অবস্থা সমান নয়। কারও কারও গোলা দিয়ে বৃষ্টির জলও ঢোকে। কত আর ঢেকে প্রতিমা তৈরি করব? বৃষ্টির মধ্যে এক গোলা থেকে আর এক গোলায় গিয়ে কাজেরও অসুবিধা হয়।’’ সব মিলিয়ে আনন্দ আর অনিশ্চয়তা— এই দুয়ের মধ্যে রীতিমত ব্যস্ততা কুমোরটুলিতে।