দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ সময় মাত্র ১৫ মিনিট। তার মধ্যেই করতে হবে লুঠ। গুরুর কাছে এই প্রশিক্ষণই পেয়েছিল ‘গামছা ভোগলা’। আর সেই ‘ট্রেনিং’ই কাজে লাগিয়ে দিনদুপুরে মাত্র ১৫ মিনিটে প্রায় চার লাখ টাকার জিনিসপত্র লুঠ করে পালাল ‘ভোগলা’ ও তার দুই সঙ্গী। আবার ধরাও পড়ে গেল। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ভিতর দক্ষিণ কলকাতার ত্রাস এই ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’কে গ্রেপ্তার করলেন টালিগঞ্জ থানার পুলিশ আধিকারিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, এই লুঠের ঘটনার অভিযোগকারী টালিগঞ্জের এক প্রৌঢ় দম্পতি। তাঁরা দোতলা বাড়ির বাসিন্দা। প্রৌঢ় সকালেই বেরিয়ে যান কাজে। সম্প্রতি প্রচণ্ড গরমকে উপেক্ষা করেই তার প্রৌঢ়া স্ত্রী দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ ওযুধ কিনতে বের হন। পিছনের দরজায় তালা দিয়ে বেরিয়ে যান প্রৌঢ়া। বুঝতেও পারেননি যে, মিস্ত্রি ও শ্রমিক সেজে তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছে ভোগলার ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’ গ্যাং। তিনি বেরনোর সঙ্গে সঙ্গেই পিছনের পাঁচিল ডিঙিয়ে ভিতরে বাড়ির চত্বরে পৌঁছে যায় তারা। তালা খোলার ছোট শাবলের মতো যন্ত্র, যা চোর ও লুঠেরাদের কাছে ‘গামছা’ বলে পরিচিত, তা দিয়েই তালা খুলে ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। সোজা শোওয়ার ঘরে ঢুকে আলমারির পাশে রাখা চাবি খুলে লকার থেকে কয়েক লাখ টাকার সোনা ও হীরের গয়না লুঠ করে নেয়। এমনকী, ঘরে থাকা রেডিও, দু’টি দামী ঘড়ি, দু’টি মোবাইলও বাদ দেয়নি।
১৫ মিনিট পরে বাড়ির কর্ত্রী ফিরে এসে দেখেন, পিছনের দরজা খোলা। ততক্ষণে লুঠ করে সামনের দরজা খুলে পালিয়ে যায় তিন দুষ্কৃতী। টালিগঞ্জ থানার পুলিশ আধিকারিকরা তদন্ত শুরু করে সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখেন। সেই সূত্র ধরে জানা যায়, এক দুষ্কৃতী যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার আক্রা-সন্তোষপুরের বাসিন্দা। রবীন্দ্র নামে ওই দুষ্কৃতীকে জেরা করেই ঢাকুরিয়া থেকে সেলিমপুরের দিকে যাওয়ার রাস্তায় একটি ঝুপড়ির ভিতর থেকে মূল অভিযুক্ত ভোগলা ও তার সঙ্গীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
ধৃতদের কাছ থেকে রেডিও ও মোবাইল উদ্ধার হয়। তাদের জেরা করেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি ডেরায় তল্লাশি চালিয়ে বাকি ঘড়ি, গয়না পুলিশ উদ্ধার করে। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার লেক, চারু মার্কেট, রবীন্দ্র সরোবর থেকে শুরু করে রিজেন্ট পার্ক এলাকার বিভিন্ন জায়গায় লুঠের জন্য রেইকি করত এই ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’ গ্যাং। তারা সুযোগ পেলেই দিনদুপুরে ‘গামছা’ দিয়ে তালা ভেঙে ঢুকে পড়ত বাড়িতে। এভাবে একের পর এক জায়গায় লুঠ করেছে তারা। ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’কে জেরা করে তাদের বিভিন্ন কীর্তির ব্যাপারে আরও তথ্য নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।