উত্তর ২৪ পরগনা, ২১ মে : “আমি কখনও বলি না, কিন্তু আমিও হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের মেয়ে। মনে রাখবেন। কিন্তু পরিচয় দিই না। কারণ বিজেপির থেকে সার্টিফিকেট নেব না, যে আমি হিন্দু না মুসলিম। আমি মানুষ। নোংরা পার্টি।’’
বারাসতে মঙ্গলবার নির্বাচনী সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকলকে শুভনন্দন জানিয়ে বক্তৃতা শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চারপাশে ধর্মীয় বিতর্কের প্রেক্ষিতে সেখানে এই মন্তব্য করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি জানি আমার নাম কে দিয়েছিল। পদবি কে দিয়েছিল। ভাগ্যিস হিন্দু ছিলাম। নয়তো বলত বিদেশ থেকে এসেছে। এনআরসি করে দিত।”
"এই জেলায় অনেক প্রাণের ঠাকুর রয়েছেন। তাঁদের প্রণাম জানাই।’’ এই মন্তব্য করে মমতা বলেন, ‘‘ওঙ্কারনাথ মন্দির একটা তোরণ করতে চেয়েছিল। আমি তা-ও করে দিয়েছি। বেলুড়ে জেটি করে দিয়েছি। যে যেখানে বলেছেন। মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, থান, আমি ভেদাভেদ করি না। ওরা বলে হিন্দুধর্মে বিশ্বাস করি না।”
মমতা বলেন, ‘‘ভগিনী নিবেদিতার বাড়ি দখল হয়ে গিয়েছিল বাগবাজারে। আমি নিজে দু’বার গেছি। রাজ্য সরকারের টাকা দিয়ে, পুরসভার টাকা দিয়ে কিনিয়ে দিয়েছি। দার্জিলিঙে যেখানে নিবেদিতা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মিটিং ডাকি। বিমল গুরুং ছিলেন জিটিএতে। ওকে বলি অন্য বাড়ি নাও। ওটা হবে না।’’
মমতা বলেন, ‘‘স্বামী বিবেকানন্দের বাড়ি বিক্রি হয়ে যাচ্ছিল। আমার কাছে খবর এসেছিল। আপনাদের জেলার মানুষ সুব্রত মৈত্র। এক দিন মধ্যরাতে ফোন। বলেন, কতগুলো লোক এসে বাড়ি দখল করছে। এক দিনে আমি পুরসভাকে দিয়ে ওই বাড়ি কিনিয়ে দিয়েছিলাম। কারণ তখন আমাদের পুরসভা ছিল রাজ্য সরকারের টাকায়।’’
মমতা জানান, মধ্যমগ্রামে অনুকূল ঠাকুরের আশ্রমের জন্য পাঁচ একর জমি দেওয়া হয়েছে। বিনামূল্যে। যাতে সেটা ভাল করে হয়ে যায়। তাঁর কথায়, ‘‘লোকনাথ বাবার চাকলা ধাম, সেখানেও অনেক টাকা খরচ করা হয়েছে। কচুয়া ভাল ভাবে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
মমতা বলেন, “দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক আমরা করেছি। যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম, বেলুড়, দক্ষিণেশ্বরে টিকিট কেন্দ্র সেখানকার মতোই করেছি। তারামায়ের মন্দির সুন্দর তৈরি হয়েছএ। সতীপীঠ, কঙ্কালীতলা, কী তৈরি হয়নি বলুন তো? মাজের থান থেকে ইমামবরা, সবই করেছি।’’
মমতা বলেন, ‘‘এই জেলায় হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিনে ছুটি দিয়েছি। বড়মাকে সম্মান করতাম। থাকলে যেতাম। ইছামতী নদীর উপর সেতু, গাঁইঘাটা ব্লকে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর তোরণ করা হয়েছে। এই জেলায় অনুকূল ঠাকুরের তীর্থস্থান রয়েছে।’’
মমতা বলেন, ‘‘হাবড়ায় ১০০ শয্যার কোভিড হাসপাতালে গড়ে তোলা হয়েছিল। এখন কোভিড নেই। সেই হাসপাতাল চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করার চেষ্টা হচ্ছে।’’