kolkata

1 year ago

Coromondal Express Accident : বাবার বিশ্বাস আর অদম্য প্রচেষ্টা ! করমন্ডল দুর্ঘটনার পরও ফিরে পেলেন ছেলে কে

Father found his son alive in a morgue   (Symbolic Picture)
Father found his son alive in a morgue (Symbolic Picture)

 

 দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ করমন্ডল এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনার বীভৎসতা প্রতিটি ভারতবাসীর মন কে বিচলিত করেছে, এখন সংবাদ মাধ্যম বা সমাজ মাধ্যমে বারবার ঘোরা ফেরা করছে ঐ দিনের সেই বিভৎসতার ছবি, বর্ননা, প্রিয় জনকে হারানোর আর্তনাদ হাহাকার প্রতিটি মানুষের হৃদয়কে মর্মাহত করেছে। আর যারা এই অকল্পনীয় দুর্ঘটনার পর ও প্রানে বেঁচে গিয়েছেন, সেই দিনের স্মৃতি ক্রমাগত তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাদের। 

দুর্ঘটনার পর সকলেই নিজের নিজের প্রিয় জনের খোঁজ করেছেন কেউ জীবিত পেয়েছেন কেউ আর ফিরে পান নি তাদের প্রিয় জন কে। ব্যতিক্রম হয়নি কলকাতা হাওড়া নিবাসী হেলারাম মালিকের ক্ষেত্রে ও। দুর্ঘটনার পর থেকে নিজের ছেলে বিশ্বজীৎ মালিকের খোঁজ করেছেন তিনি। 

এই ঘটনা ঘটার কিছু সময় আগেই বিশ্বজীৎ কে শালিমার স্টেশনে ছেড়ে যান তিনি। খবরে এই দুর্ঘটনার কথা শুনে তিনি ছেলের ফোনে ফোন করলে বেদনা কাতর ক্ষীন এক কন্ঠস্বর ভেসে আসে অপর প্রান্ত থেকে। এর পরই আর এক মুহ্ররত সময় নষ্ট না করে হেলারাম তার একজন সঙ্গী( দীপক দাস ) ও অ্যাম্বুলেন্স চালক (পলাশ পন্ডিত) কে সঙ্গে সেই রাতেই ২৩০ কিমি দূরে আহত ছেলের কাছে পৌঁছানোর সংকল্প নেন। কিন্তু ঘটনা স্থলে পৌঁছে বিভিন্ন হসপিটালে খোঁজ করেও বিশ্বজীতের কোনো খোঁজ মেলে না। কিন্তু হাল ছাড়েনি হেলারাম ও তার সঙ্গীরা স্থানীয়দের কাছে ছেলের খোঁজ করতে শুরু করে, তাদের মধ্যে থেকে জনৈক ব্যক্তি মর্গে খোঁজ নিতে বলেন। 

কাছেই অস্থায়ী একটি মর্গে অগনিত লাশের স্তুপের মধ্যে খোঁজ শুরু হয় বিশ্বজীতের। এই খোঁজ চলা কালীনই হঠাৎ একটি শোরগোল শেনেন হেলারাম ও তার সঙ্গীরা। কী ঘটনা জানতে সেখানে ছুঁটে গেলে জানা যায় মর্গে নিয়ে আসা এক জন এখন জীবত রয়েছে এবং তার কম্পমান হাত দেখে হেলারাম মুহুর্তে চিনে নেন তার ছেলেকে। 

সাথে সাথেই বিশ্বজীৎকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বালাসোর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, প্রাথমিক কিছু চিকিৎসার পর কটক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয় তাকে, কিন্তু বন্ড দিয়ে বিশ্বজীৎকে কলকাতার এসএসকেএম -এ নিয়ে আসেন হেলারাম ও তার সঙ্গীরা।  

 বর্তমানে এসএসকেএম -এ চিকিৎসাধীন রয়েছে বিশ্বজীৎ, রবিবার তার একটি পায়ের অ্যাঙ্কেল অপারেশন হয়েছে। জ্ঞান ও ফিরেছে অপারেশনের পর, সোমবার আরো একটি পায়ে অপারেশন হবার কথা রয়েছে, এছাড়াও তার ডান হাতেও অনেক গুলি ক্ষত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন অংশে অসংখ্য ক্ষত করমন্ডল দুর্ঘটনার ভয়াবহতা বর্ননা করছে। 

ফরেনসিক মেডিকেল এক্সপার্ট সোমনাথ দাস বিশ্বজীতের বর্তমান অবস্থার কথা বলতে গিয়ে বলেন-এই মুহুর্তে "সাসপেন্ডেড অ্যানিমেশনের" মধ্যে রয়েছে। তবে এখনি আশাহত হওয়া বা নিরাশ হবার মত কিছুই হয়নি। মেডিকেল টিম কাজ করছে বিশ্বজীতের দ্রুত আরোগ্যের জন্য। 

প্রসঙ্গত, এই ট্রেন দুর্ঘটনায় উদ্ধারকারী দলের অধিকাংশ সদস্যই নন-মেডিকেল স্টাফ হবার দরুন হবু অচৈতন্য মানুষকেই হয়ত বিনা চিকিৎসায় মারা যেতে হয়েছে। বিশ্বজীতের মতই হয়ত বহু মানুষ এই দুর্ঘটনার পর এতটাই মানসিক ও শারিরীক আঘাত পেয়েছেন হয়তো নিজের বেঁচে থাকার সংকেত টুকুও দিতে পারেনি, সেক্ষেত্রে হয়ত বহু মানুষ হয়তো বিনা চিকিৎসায় প্রান হারিয়েছেন। 

You might also like!