দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ১৭ সেপ্টেম্বর : তিনশো বছরের বেশি সময় ধরে পুজো চলছে বারুইপুরের রায়চৌধুরী বাড়িতে। ব্রিটিশ শাসক লর্ড কর্ণওয়ালিস-এর সময়ে এই এলাকায় জমিদারির পত্তন হয় রায়চৌধুরীদের। আর সেই থেকেই শুরু হওয়া দুর্গাপুজো নিজস্ব জৌলুস নিয়ে আজও অমলিন। জমিদারি না থাকলেও, বনেদিয়ানাতে খামতি নেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গা পুজোয়। এই জেলার অন্যতম পুরানো দুর্গা পুজো এটি। এক সময় জেলার বাবুদের বাড়ির পুজো বলতে এই পুজোটিকেই চিনতেন সকলে। এই পুজোর অন্যতম বিশেষত্ব হল, মহালয়ার পরদিন অর্থাৎ প্রতিপদ থেকেই শুরু হয়ে যায় দেবীর আরাধনা। এখনও সপ্তমি ও অষ্টমীতে পাঁঠাবলি হয়। নবমীতে হয় আঁখ ও চাল কুমড়ো বলি। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখনো বহু মানুষ আসেন এই বাড়ির পুজো দেখতে। প্রতিবছর দশমীতেই প্রতিমা বিসর্জনের রেওয়াজ রয়েছে। রায়চৌধুরীদের বাড়ির ঠাকুর প্রথম বিসর্জন দেওয়া হয়, তারপর এলাকার অন্য প্রতিমার বিসর্জন হয়। বিসর্জনের সময় রুপোর পাখা দিয়ে দুর্গাকে হাওয়া করা হয়, রুপোর ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করা হয় রাস্তা। বহুদিন ধরে এই রীতিই চলে আসছে। সরকারী ভাবে নীলকণ্ঠ পাখি ধরা ও দুর্গা ঠাকুর বিসর্জনের পর তা উড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, এটাই প্রধান বিশেষত্ব এই বনেদি বাড়ির পুজোর। এখনও বিসর্জনের পর বারুইপুরের আদি গঙ্গার সদাব্রত ঘাট থেকে নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে আসছেন বারুইপুরের এই আদি জমিদার রায়চৌধুরীরা। তবে গতবছর পাখি পাওয়া যায়নি বলে ওড়ানো হয়নি। কিন্তু এবার পাখি পাওয়া গেলে সেই পুরানো রীতি মেনেই ওড়ানো হবে নীলকণ্ঠকে।