খড়গপুর, ১৯ সেপ্টেম্বর : পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনার জাড়া রাজবাড়ির দুর্গাপুজো যেন ইতিহাসের জীবন্ত দলিল। এই রাজবাড়ির ঐতিহ্য আজও বঙ্গের সংস্কৃতিকে গৌরবান্বিত করে।
চন্দ্রকোনা ১নং ব্লকের জাড়াগ্রামের রায় বংশের কথা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। এই বংশের আদি পদবি গঙ্গোপাধ্যায়। এই রাজবাড়ির দুর্গাপুজোয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায়, প্রফুল্লচন্দ্র সেনদের মতো মনীষীরা আসতেন। পরে বাংলার মহানায়ক উত্তমকুমার 'অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি' ছবির শুটিং করতে এই রাজবাড়িতে এসেছিলেন। এই বংশের সন্তান রামগোপাল রায়ের ছেলে রাজীবলোচন রায় জাড়া বংশের গৌরবকে আরো মহিমান্বিত করেন বলে জানা যায়। রাজীবলোচন পরে 'রাজা' উপাধি পেয়েছিলেন। মূলত, তাঁর হাত ধরেই জাড়া রাজবাড়িতে দুর্গাপুজোর শুরু হয়। সেই থেকেই রায় বংশের ঐতিহ্য পরম্পরা নিজ বিভায় ভাস্বর।
রাজবাড়ির দুর্গাপুজো প্রায় ২২৩ বছরের পুরোনো। আজও প্রাচীন বিধান মেনে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে পুজো হয়। বলিদানের কোনো প্রথা নেই। মহাষ্টমীর দিন ব্রাহ্মণভোজ, নরনারায়ণ সেবার আয়োজন করা হয়। মহানবমীর দিন পরিবারের সকলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করেন।
পুজোর দিনগুলিতে খিচুড়ি, সাদা ভাত, ভাজা, তরকারি, পায়েস, চাটনি সহ প্রায় ২৫ ধরনের পদ রান্না করা হয়। দশমীর দিন প্রতিমা বিসর্জনের পর পরিবারের সদস্যরা কবি কাজী নজরুল ইসলামের 'যাস নে মা ফিরে, যাস নে জননী' গানটি গাইতে গাইতে বাড়ি ফেরেন।