দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ সোমবার হুগলি জেলার প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । প্রশাসনিক বৈঠকের পর পরিষেবা প্রদান করবেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, আরামবাগের কালীপুর মাঠে এই সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গী ঘাটালের তারকা সাংসদ দেব । সম্প্রতি ঘাটালে দেবের ফের প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। তবে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর আলোচনার পর সেই জল্পনার অবসানের ইঙ্গিত মেলে। তার পর এই প্রথম প্রকাশ্য সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন দেব। যা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
গত বৃহস্পতিবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে ঘাটালের সাংসদ দেব অধিকারী বলেছিলেন, ‘সংসদে এটাই আমার শেষ দিন’। কিন্তু সোমবারের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গেল, সেই শেষ ছিল একেবারেই আপেক্ষিক। সপ্তদশ লোকসভায় সেদিন শেষ প্রহর ছিল দেবের। তারপর শনিবার প্রথমে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেবের দীর্ঘ বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকের পর দেব তাঁর কাছের মানুষদের ফোন করে বলেছেন, অভিষেকের সঙ্গে কথা বলে তিনি 'ইমপ্রেসড'। লোকসভা ভোটে ফের প্রার্থী হবেন তিনি। সম্ভবত ঘাটাল থেকে বা পাশের আসন আরামবাগ থেকে। তারপর সোমবার দেখা গেল, হাওড়ার ডুমুরজলা স্টেডিয়াম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হেলিকপ্টারে উঠছেন দেব।
গরু পাচার মামলার সূত্রে দেবকে একবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল সিবিআই। বাংলায় বিজেপি নেতাদের অনেকেই তারপর থেকে ঘরোয়া আলোচনায় এ খবর চাড়িয়ে দিয়েছিলেন, যে দেব সেই কারণেই ভীত। তিনি আর ভোটে দাঁড়াবেন না।
কিন্তু সেই ধারণাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করতে চলেছেন দেব। বিজেপির সেই সব প্রচ্ছন্ন হুমকির প্রেক্ষাপটে এ যেন মহানায়কোচিত ফেরা।
ঘাটালে দেবের সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের অনেকের বনিবনার অভাব ছিল। বিশেষ করে প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলুইয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাব হচ্ছিল। এই অবস্থায় রবিবারই শঙ্কর দলুইকে সরিয়ে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান করা হয়েছে রাধাকান্ত মাইতিকে। রবিবার ওই ঘটনার মধ্যেও ইঙ্গিত ছিল যে দেব ফের ঘাটালে প্রার্থী হতে পারেন।
লোকসভা ভোটে বিজেপি যে বাংলায় সবরকম ভাবে ঝাঁপাবে তা নিয়ে কোনও রহস্য নেই। মোদী-শাহ জমানার কৌশলই হল, একটি একটি করে আসন জোড়া। বাংলায় শাসক দল যে তারই মোকাবিলায় আসন ধরে ধরে এগোচ্ছে তা স্পষ্ট। দলের কাছে পরিষ্কার ছিল যে ঘাটালে দেব প্রার্থী না হলে তৃণমূলের পক্ষে জেতা মুশকিল। অথচ এ ব্যাপারে দেবের মধ্যে দোদুল্যমানতা ছিল। তা কাটাতে গত ৬ মাসে দেবের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীপুজোর পরদিন দধিকর্মার পর তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে দেবকে আধ ঘণ্টা ধরে বোঝানোর চেষ্টা করেন দিদি। শেষমেশ শনিবার অভিষেকের সঙ্গে দেবের বৈঠকটাই অনুঘটকের কাজ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।