কলকাতা, ১৯ জানুয়ারি : ১১ বছর পর ব্যঙ্গচিত্র-কাণ্ডের ফৌজদারি মামলা থেকে নিষ্কৃতি মিলল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রিডার ডঃ অম্বিকেশ মহাপাত্রর। বৃহস্পতিবার তিনি সামাজিক মাধ্যমে এখবর জানিয়েছেন। এতে নেটনাগরিকদের সমর্থন ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
তিনি আদালতের সংশ্লিষ্ট নথি যুক্ত করে ফেসবুকে লিখেছেন, “প্রায় ১১ বছর পর ব্যঙ্গচিত্র-কাণ্ডের ফৌজদারি মামলা থেকে নিষ্কৃতি মিলল। রাজ্যের সাধারণ প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, শাসকদল এবং দুষ্কৃতীদের শত বে-আইনি এবং অসাংবিধানিক বাধা সত্ত্বেও। এই জয় গণতন্ত্রপ্রিয় নাগরিকের গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধতার জয়।“
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৎকালীন দুই তৃণমূল সাংসদের কার্টুন নিয়ে মামলায় জড়িয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র-সহ পাঁচ জন। রসিকতার জেরে কেন পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করেছিল, তা নিয়েও বিতর্ক চলেছিল বিস্তর। ঘটনার ন’বছর পরে, ২০২১-এর ১৫ সেপ্টেম্বর সেই মামলা থেকে আংশিক রেহাই পান অম্বিকেশবাবু। আলিপুরের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নির্দেশ, চার্জশিটে পুলিশ অম্বিকেশবাবুর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬এ ধারায় যে অভিযোগ এনেছিল, সেই ধারা তাঁর বিরুদ্ধে প্রযোজ্য নয়। এর পর পুরো নির্দোষ প্রমাণিত হলেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ওই ৬৬এ ধারা ২০১৫ সালে বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। অম্বিকেশবাবুর বিরুদ্ধে ২০১২ সালে দায়ের হওয়া মামলায় ওই ধারায় অভিযোগ এনেছিল পুলিশ। চার্জশিট দেওয়ার সময়ে অম্বিকেশবাবু এবং সুব্রত সেনগুপ্তকে অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। অম্বিকেশবাবুদের আবাসনের বাসিন্দা এবং গ্রেফতারের সময়ে আবাসন কমিটির সম্পাদক সুব্রতবাবু প্রয়াত হয়েছেন প্রায় তিন বছর আগে।
অপর একটি ফেসবুক পোস্টে অম্বিকেশবাবু এদিন লিখেছেন, “২০১৬। রাজ্যবাসী তথা দেশবাসী তথা বিশ্ববাসী টিভির পর্দায় দেখেছে, একজন পুলিশ কর্তা সহ রাজ্যের শাসকদলের ১২ জন হাত পেতে ঘুষ নিচ্ছে। অভিযুক্ত রাজ্যের শাসকদলের এক দাপুটে নেতা, সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী বর্তমানে বিরোধী দলনেতা এবং কেন্দ্রের শাসকদলের নেতা। রাজ্যের শাসকদল বিরোধী দলনেতাকে আগে হাত পেতে ঘুষ নিতে দেখেনি, কিন্তু বর্তমানে দেখছে। বাকিদের আগেও হাত পেতে ঘুষ নিতে দেখেনি এবং আজও দেখতে পাচ্ছে না। আর কেন্দ্রের শাসকদল এখন কাউকেই হাত পেতে ঘুষ নিতে দেখতে পাচ্ছে না। ধান্ধার পুঁজিবাজারে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নবতম পণ্য।”